বড় পরিবর্তন আসছে আকাশপথের যোগাযোগ ব‌্যবস্থায়

প্রকাশিত: ১২:১৩ অপরাহ্ণ, জুন ১১, ২০২০

নাসার মহাকাশ স্টেশনে মে মাসে বিশ্বে প্রথমবারের মতো বেসরকারি স্পেস এক্স দুজন নভোচারী পাঠায়। মহাকাশ স্টেশনে যখন নভোচারী পাঠানো হচ্ছে, সেই সময়ে গোটা পৃথিবীর বিমান যোগাযোগ বলতে গেলে প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ।

অত্যন্ত সীমিত পরিসরে চলছে অভ্যন্তরীণ বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা। ধারনা করা হচ্ছে, করোনা পরবর্তী নতুন ব্যবস্থায় আকাশ যাতায়াতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।

আগের মতো ভিসা ও টিকিট থাকলেই আর ভ্রমণ নিশ্চিত হবে না, নিরাপত্তার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিকেও অত্যন্ত গুরুত্বেও সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।

পৃথিবীর বিমান যোগাযোগের বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো মোহাম্মাদ শহীদুল হক বলেন, ‘পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে এভিয়েশন খাতে।’ যাত্রী, প্লেন ও বিমানবন্দর তিন জায়গাতেই পরিবর্তন আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগের পরিস্থিতি আর কখনোই ফেরত আসবে না।’

এই কূটনীতিক আরও জানান, পরিবর্তন আসতে পারে বিমান ভ্রমণ সংক্রান্ত যে নিয়ম কানুন আছে তারমধ্যে ৭০টি জায়গায়।

যাত্রীদের ভ্রমণ করার সময় একটি বাড়তি কাগজ লাগতে পারে এবং সেটি হচ্ছে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ইয়েলো কার্ড। বর্তমান পরিস্থিতিতে এধরনের একটি বাড়তি কাগজের কথা চিন্তা করা হচ্ছে যেখানে যাত্রীর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য থাকবে এবং ভ্রমণের সময় এটি বহন করতে হবে।’

বাধ্যতামূলক ভ্রমণের আগে করোনা পরীক্ষা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন নিরাপত্তার সামান্য ঝুঁকি আছে এমন কোনও যাত্রীকে যেমন কোনোও বিমান ভ্রমণ করতে দেয় না, তেমনি হয়তো অল্প জ্বর বা কাশির মতো সামান্য শারীরিক সমস্যার কারণে যাত্রী পরিবহন অস্বীকার করতে পারে বিমান সংস্থাগুলি।’

প্লেনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সামাজিক ডিসট্যান্সিং-এর জন্য প্লেনের সিট সংখ্যা কম হবে এবং প্রতিবার ভ্রমণের পর গোটা বিমানকে জীবাণুমুক্ত করা হবে।’ এছাড়াও স্বল্প যাত্রায় খাবার বন্ধ হবে এবং দীর্ঘ যাত্রায় খাবার ভিন্নভাবে পরিবেশিত হবে এবং প্লেনের ক্রুদের পরিষ্কার-পরিছন্নতার ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হবে বলে মনে করেন শহীদুল হক।

গোটা ব্যবস্থার পরিবর্তনের কারণে খরচও বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্লেনে কাগজ থাকবে না এবং অনস্ত্রিন ডিসপ্লের মাধ্যমে যাত্রীরা সবকিছু জানতে পারবে।’

বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে যাত্রার দুই ঘণ্টা আগে যেতে হতো কিন্তু এখন অন্তত চার ঘণ্টা আগে যেতে হবে। কারণ বাড়তি ব্যবস্থা হিসাবে প্লেনে ওঠার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে।’

তিনি জানান, যাত্রী ছাড়া এয়ারপোর্টের মূল ভবনে আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না এবং নিরাপত্তা আর্চওয়ের পাশাপাশি জ্বর পরিমাপের আর্চওয়ে থাকবে বলেও ।

এই পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলির কী অবস্থা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বর্তমান যে ব্যবস্থা আছে, সেটি বহাল থাকবে এবং এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ঝুকিঁ নির্ণয়ের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।’ তবে নতুন প্রক্রিয়াটি ব্যয়বহুল এবং প্রযুক্তিনির্ভর জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরফলে খরচ বৃদ্ধি পাবে যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির পক্ষে একটি চ্যালেঞ্জ।’