অবশেষে আসতে পারে ভ্যাকসিন!

প্রকাশিত: ৯:৩১ অপরাহ্ণ, মে ৩০, ২০২০
2BEHRJJ (200414) — BEIJING, April 14, 2020 (Xinhua) — A staff member displays samples of the COVID-19 inactivated vaccine at Sinovac Biotech Ltd., in Beijing, capital of China, March 16, 2020. China has approved two COVID-19 inactivated vaccine candidates for clinical trials, according to the State Council joint prevention and control mechanism against the coronavirus Tuesday. The two vaccine candidates are developed by Wuhan Institute of Biological Products under the China National Pharmaceutical Group (Sinopharm) and Sinovac Research and Development Co., Ltd, a company based in Beijing. Clinical

কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নিয়ে কম জলঘোলা হলো না।  যদিও কমবেশি সকলেই জানে যে কোন রোগের ভ্যাকসিন বাজারে আনতে গেলে দীর্ঘমেয়াদী সময়ের প্রয়োজন হয়।  কিন্তু কোভিড-১৯ এর  ভয়াবহতায় পুরো বিশ্ব হতভম্ব। এ কারণেই ভ্যাকসিন তৈরিতে এত তাড়াহুড়ো।   আর এতে আশার আলো দেখাচ্ছে চীন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান   সিনোভ্যাক। সিনোভ্যাকেের   তৈরি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনটি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের সম্প্রচারমাধ্যম স্কাই নিউজকে বেইজিংভিত্তিক জৈবপ্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাকের গবেষকেরা এ নিশ্চয়তা দেন। স্কাই নিউজ প্রথম ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম হিসেবে সিনেোভ্যাকের গবেষণাগার পরিদর্শন করেছে।

বেইজিং-ভিত্তিক বায়োটেক সংস্থাটি ১০ কোটি ভ্যাকসিন ডোজ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে একটি বাণিজ্যিক প্ল্যান্ট তৈরি করছে।

এটি নিরাপদ কি না, তা পরীক্ষা করতে এক হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।

স্কাই নিউজকে সিনোভ্যাকের গবেষকেরা বলেন, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার তৃতীয় ধাপ শুরু করতে তাঁরা যুক্তরাজ্যে সরকারের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্কাই নিউজ সিনোভ্যাকের গবেষক লুও বৈশানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ভ্যাকসিনটি সাফল্যের বিষয়ে তিনি কতটা আশাবাদী? জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই সফল হবে। ৯৯% শতাংশ নিশ্চিত।’

গত মাসে সিনোভ্যাক একাডেমিক জার্নাল ‘সায়েন্স’–এ তাঁদের গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করে, যাতে করোনাভ্যাক নামে তাঁদের ভ্যাকসিনটি বানরের ওপর পরীক্ষায় সফল বলে জানানো হয়। এটি বানরের শরীরে করোনা–সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছিল।

তবে সিনোভ্যাকের জন্য চীনে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় রোগীর সংখ্যা কমে যাওয়া। মহামারি পর্যায়ে ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা সেখানে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ফলে পরীক্ষার তৃতীয় ধাপ সম্পন্ন করার জন্য করোনার সংক্রমণ বেশি, এমন জায়গা খুঁজছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিনিয়োগকারী সম্পর্কের উর্ধ্বতন পরিচালক হেলেন ইয়াং স্কাই নিউজকে বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে কথা বলছি এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। বর্তমানে এটি আলোচনার খুব প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ।’

গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সংস্থাটি উৎপাদন নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

উত্তর-পশ্চিম বেইজিংয়ের সংস্থার সদর দপ্তরে কমলা ও সাদা প্যাকেট ইতিমধ্যে প্রস্তুত। তাঁদের লক্ষ্য হচ্ছে, ভ্যাকসিন পরীক্ষা সফল হলে ও অনুমোদন পেলে সরাসরি উৎপাদন শুরু করা। প্রতিষ্ঠানটি বেইজিংয়ের অন্য আরেকটি অঞ্চলে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য বাণিজ্যিক প্ল্যান্ট তৈরি করছে।

ইয়াং বলেন, ‘আমাদের পরামর্শ হবে, সবাইকে টিকা দেওয়ার দরকার নেই। আমরা এ নিয়ে বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি ও পরামর্শ দিচ্ছি। প্রথমে আমরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করব, যাদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা রয়েছেন। করোনায় তাঁদের মৃত্যুহার বেশি। সত্যি কথা বলতে গেলে, ভ্যাকসিন লট হিসেবে ধাপে ধাপে তৈরি করতে হবে।’

অবশ্য এখনই খুব দ্রুত ভ্যাকসিন আশা করা যাচ্ছে না। দ্বিতীয় ধাপ শেষ হওয়ার পর তৃতীয় ধাপে বেশ কয়েক মাস লাগবে। ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা জানার পরে অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।সাফল্যের বিষয়ে নিশ্চিত কি না, জানতে চাইলে ইয়াং স্কাই নিউজকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে বলা খুব কঠিন। অনিশ্চয়তা রয়েছে, তবে তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ঠিকভাবেই সবকিছু এগোচ্ছে।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ১০০টিরও বেশি ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে। এর মধ্যে ১০টির মতো ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার পর্যায়ে গেছে। বিশ্বে সবার আগে ভ্যাকসিন আনার প্রতিযোগিতার দৌড় শুরু হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, ভ্যাকসিন কীভাবে বিতরণ হবে এবং উৎপাদনকারী দেশগুলো তাদের জনসংখ্যাকে আগে প্রাধান্য দেবে কিনা তা নিয়ে।

চীনা প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন , চীন ভ্যাকসিন উৎপাদন করার পর বিশ্বের সব মানুষের কল্যাণে তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে, যদিও এর ব্যবহারিক ফলাফল এখনো অস্পষ্ট।