আইসিসির বলে থুতু দেওয়া নিয়ে যত কান্ড!

প্রকাশিত: ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ, জুন ২, ২০২০

ক্রিকেটের একটি অতি পরিচিত দৃশ্য  হচ্ছে বোলার থুতু বলে লাগিয়ে ট্রাউজারে ঘসে আগ্রাসী ভংগিমায় বল করতে আসছে।  তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন এর বিকল্প ভাবতে হচ্ছে বোলারদেরকেই।

করোনাভাইরাসের ঝুঁকি হ্রাস করতে এবং খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনবে আইসিসি। এর মাঝে সবচেয়ে আলোচিত হলো পেসারদের বলে থুতু ব্যবহার নিষিদ্ধ করা। উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে বলে থুতু ব্যবহারে আইসিসি ক্রিকেট কমিটির নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ দলের কোচ ও বোলাররা বলেছেন সিদ্বান্তটি কার্যকর হলে ক্রিকেটে টিকে থাকার জন্য নতুন উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

প্রথম প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে আইসিসির ক্রিকেট কমিটি। তারা বলে এখন থেকে  থুতু দেওয়া যাবে না বলে প্রস্তাব করেছে। তবে বৈধ বল টেম্পারিং বা কোন বস্তু দিয়ে বল ঘষার প্রস্তাবকে অনুমোদন দেয়নি। বল সাইন করতে হলে ব্যবহার করতে হবে ঘাম। সোমবার অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে আইসিসির ক্রিকেট কমিটি এই সিদ্ধান্ত নেয়।

ভার্চুয়াল এই মিটিংয়ে অনিল কুম্বলে বলেন, ‘আমরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আজকের সভার বিষয় তাই সুরক্ষা নিশ্চিত করে কিভাবে ক্রিকেট পরিচালনা করা যায় সে বিষয়ের ওপর। মাঠে তাই কীভাবে নিরাপদ থাকা যায়, সে বিষয়ে কিছু প্রস্তাব দিচ্ছে আইসিসির ক্রিকেট কমিটি।’

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, আইসিসির মেডিকেল উপদেষ্টা কমিটির প্রধান ডা. পিটার হারবার্ট জানিয়েছেন, থুতুর ব্যবহারে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা খুব বেশি। কিন্তু ঘামে সেটা কম। তাই আইসিসি কমিটির প্রস্তাব, বল ঘষার ক্ষেত্রে থুতুর ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি হোক। কিন্তু ঘামের ব্যবহারে সমস্যা নেই। তবে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

মেডিকেল পরামর্শে বলেছে, ঘামের মাধ্যমে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই এবং ঘাম দিয়ে বল পালিশ করার ব্যবহার নিষিদ্ধ করার দরকারও নেই, কিন্তু নিরাপদ স্বাস্থ্যকর পদক্ষেপের সুপারিশগুলো খেলার মাঠে ও তার আশেপাশে বাস্তবায়িত করা হয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে খ্যাতিমান কোচ সারওয়ার ইমরান বলেন, বলের ঔজ্জল্য বাড়াতে ঘামের ব্যবহার কার্যকর হতে পারে,  তবে বিশ্বের অনেক বোলারই আবার এতে কোনো কার্যকারীতা দেখেন না। তিনি বলেন ‘আমার খেলোয়াড়ি জীবনে, আমি বলের এক পাশ উজ্জ্বল রাখতে কখনো থুতু ব্যবহার করিনি। তবে আমি বলটি আমার ট্রাউজারে ঘষতাম। ঘাম উপকারী হতে পারে। যদিও আধুনিক সময়ে, বোলাররা থুতু ব্যবহার করে, কিন্তু আমাদের সময়ে এটি ব্যবহারের কথা ভাবিনি।

পেস বোলার হিসেবে খেলা ইমরান মনে করেন, থুতু ব্যবহার নিষিদ্ধ হলে বোলাররা লড়াই করার জন্য অবশ্যই কোনো উপায় খুঁজে পাবে। তিনি বলেন, ‘বোলাররা অবশ্যই নতুন কোন উপায় বের করবে। বিশ্বে পরিবের্তন হয়েছে, সুতরাং ক্রিকেটেও হবে। কারণ ব্যাটসম্যান-বোলারদের যুদ্ধের জন্য সুইং ও রির্ভাস সুইং অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। টেস্ট ক্রিকেটে থুতু ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক যুগে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে, বেশিরভাগ বোলারই স্লোয়ার ডেলিভারি, কাটারের উপর নির্ভর করে। ইর্য়রকারে বলে এক পাশের উজ্জ্বলতার খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।’জাতীয় দল এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে বিভিন্ন ক্লাবে কোচের দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, থুুথু ব্যবহার করে বল যতটা উজ্জ্বল করা যায়, ঘামে তা করা যায় না। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বল উজ্জ্বল করার জন্য থুতুই সর্বোত্তম পন্থা। হ্যাঁ আপনি ঘাম ব্যবহারের কথা বলতে পারেন আমি অভিজ্ঞতা থেকে বলছি এতে বল ভারী হয়ে যেতে পারে।’