আগামী ৪ মাস যদি বেগম খালেদা জিয়া কঠোরভাবে জামিনের শর্ত প্রতিপালন না করেন তাহলে সরকার জামিন বাতিল করবে

প্রকাশিত: ৬:০১ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২০

করোনা সঙ্কটের সময় হঠাৎ করে চাঙ্গা হয়েছিল বিএনপি এবং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ২৫ মাস পর ৬ মাসের জন্য কারামুক্ত হয়েছেন। বিএনপি করোনা সঙ্কট নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বেশ সরব হয়েছে এবং সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ব্যর্থতা তুলে ধরছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। আর এসব কারণেই মনে করা হচ্ছিল বিএনপি চাঙ্গা হচ্ছে। কিন্তু সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, করোনা পরিস্থিতির লাগাম টেনে ধরার পরপরই বিএনপির উপর চড়াও হবে সরকার। বিশেষ করে বিএনপি এই করোনাকালীন সময়ে যে ‘অপকর্ম’ গুলো করেছে সেগুলোর একটি সুরাহা করা হবে।

সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, এই সময়ে বিএনপি যে কাজগুলো করেছে তা বিভ্রান্তিকর, হতাশাজনক এবং জনগণের বিরুদ্ধে এক ধরণের ষড়যন্ত্র। সরকারের সূত্রগুলো থেকে বলা হচ্ছে যে, বিএনপি নানারকম অপপ্রচার, বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও বিরোধী দলগুলো নানারকম মিথ্যাচার ছড়িয়েছে। আর এসব কারণে করোনা পরিস্থিতি যদি একটু অনুকূলে আসলে বিএনপির জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে এবং বিএনপির উপর নতুন স্টিম রোলার চালানো হতে পারে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সামনের দিনগুলোতে বিএনপিকে যে কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে তাঁর মধ্যে রয়েছে-

১. বেগম খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে যে ৬ মাসের জামিন দেওয়া হয়েছে, তাঁর মধ্যে ২ মাসের বেশি সময় ইতিমধ্যে অতিবাহিত হয়ে গেছে। এখন আগামী ৪ মাস যদি বেগম খালেদা জিয়া কঠোরভাবে জামিনের শর্ত প্রতিপালন না করেন তাহলে সরকার জামিন বাতিল করবে। সরকারের একাধিক সূত্র বলছে, মূলত করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটেই বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া হয়েছিল এবং করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে তাঁকে আবার কারাবরণ করতে হবে। অবশ্য সরকারের একাধিক নেতা বলছেন যে, তাঁদের কাছে কিছু খবর রয়েছে যে, বেগম খালেদা জিয়া আস্তে আস্তে নিজেকে আবার রাজনীতির সঙ্গে জড়াতে শুরু করেছেন এবং এই ঈদের ছুটিতে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং সরকারের সমালোচনা করেছেন বলে কিছু তথ্য সরকারের হাতে রয়েছে। এটাকে বাড়তে দেওয়া যাবেনা এবং তিনি তিনি যদি এটা করতেই থাকেন তাহলে সরকার জামিন বাতিলের চিন্তা করবে।

২. বিএনপির একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানারকম অপপ্রচার, মিথ্যাচার এবং গুজব ছড়াচ্ছে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। করোনা নিয়ে এই গুজব সন্ত্রাসের উৎস খুঁজতে গিয়ে সরকার দেখেছে যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ধরণের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির জড়িত। যারা এই ধরণের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত এবং যারা সরকারবিরোধী এইসব অপপ্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে। এই ব্যাপারে ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ চালু হতে পারে বলে সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

৩. বিএনপির নেতারা এই সময়ে বেশ উচ্চকণ্ঠেই সরকারের সমালোচনা করেছে এবং এমন সব কথা বলেছে যে, যেগুলো সত্যিকারের সমালোচনা নয়। বরং শুধুমাত্র সরকারকে দোষারোপ করার সংস্কৃতি। এই কারণে সরকার বিএনপিকে যে স্পেস দিয়েছিল, সেই স্পেসটুকুও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিএনপির একাধিক নেতার বিরুদ্ধেই অনেক দূর্নীতির মামলা রয়েছে এবং এই মামলাগুলো কার্যত অচল রয়েছে। ইতিমধ্যে দূর্নীতি সমন কমিশন বলেছে যে, পরিস্থিতির উন্নতি হলেই বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে যে দূর্নীতির মামলাগুলো রয়েছে সেগুলো পুনরায় চালু করা হবে এবং এই মামলাগুলো যে বিএনপিকে ঘরে রাখার বড় ওষুধ তা বিএনপির অজানা নয়। তাই সামনের দিনগুলোতে করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই বিএনপি গত দুই মাসে যা করেছে তাঁর প্রতিদান পাবে বলে মনে করছে সরকারের একাধিক মহল।