আদমদীঘিতে শুরু হয়েছে ৭০০ বছরব্যাপী চলা ঐতিহ্যবাহী চড়ক মেলা Admin Admin প্রকাশিত: ৮:৫৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০২৩ মোঃ আহসান হাবিব শিমুল (আদমদীঘি, বগুড়া) আজ শুক্রবার আদমদীঘি উপজেলা সদরের তালশন (মাঝিপাড়া) গ্রামের চড়কতলায় বসছে শত বছরের ঐতিহ্য চড়ক পূঁজার মেলা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বৈশাখ মাস যেমন বাংলা বছরের প্রথম মাস তেমনি বছরের সমাপনী মাস হল চৈত্র। সনাতন ধর্মালম্বীদের মতে চৈত্রের শেষ দিনটিকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায় নানা পূঁজা অর্চনা ও আচার অনুষ্ঠান করে থাকে। বাংলা বছরের শেষ মাস চৈত্র’র নামকরণ করা বিষয়ে সনাতন ধর্মাম্বলীদের আদিগ্রন্থ পুরানে বর্ণিত আছে যে ২৭ নক্ষত্র রাজা প্রজাপতি দক্ষের সুন্দরী কন্যা চিত্রা’র নামানুসারে নামকরণ করা হয়। চিত্রার জন্মদাতা দক্ষ। দক্ষের ২৭ কন্যার বিয়ে হয় চন্দ্রদেবের সাথে। এই ২৭ কন্যার মধ্যে এক কন্যা চিত্রা ছিল অতীব সুন্দরী। সুন্দরী চিত্রার নামানুসারে চিত্রানক্ষত্র থেকে চৈত্র মাসের নামকরণ করা হয় ( তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় মত, চিত্রা নক্ষত্রে সূর্যের অবস্থান থেকে এসেছে চৈত্র নামটি) । চৈত্র মাসের অন্যতম প্রধান উৎসব চড়ক পূঁজা। আদমদীঘি উপজেলা সদরের মাঝিপাড়া গ্রামে প্রায় ৭শ’ বছর পূর্বে থেকে বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনের সন্ধ্যালগ্নে জীবন্ত মানুষের পিঠে বড়শি ফুটিয়ে আকাশপানে তুলে চড়ক ঘুড়ানো হয়ে থাকে । এবার সরকারি হিসাবে বৃহস্পতিবার চৈত্র সংক্রান্তি হলেও সনাতনী পঞ্জিকা মতে চৈত্র সংক্রান্তি শুক্রবার। এ উপলক্ষ্যে উপজেলা সদরের মাঝিপাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন পূঁজা অর্চনার আয়োজন করেছে। পূঁজা উপলক্ষে চড়কতলায় বসবে ঐতিহ্যবাহী জমজমাট চড়ক মেলা। উপজেলা সদরের তালশন ( মাঝিপাড়া) গ্রামের জমিদার পরিবারের প্রবীন ব্যক্তি ও চড়কপূঁজা কমিটির সভাপতি বাবু সত্যেশ চন্দ্র নিয়োগী (ভাবু বাবু) গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের জানান, চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে ২০ চৈত্র মন্দিরে ঘটস্থাপন পূঁজা করার মধ্য দিয়ে পূঁজার পুরো কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ঘটপুজা চলে টানা ৫ দিন। পরে ২৫ চৈত্র ফুলভাংগান পূজা, ২৬ চৈত্র নাগরাকাটা পূঁজা, ২৭ চৈত্র কালী পূঁজা ও ভড়ন খেলা, ২৮ চৈত্র শ্মশান খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ২৯ চৈত্র বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃক্ষস্বরী পূঁজা, মহালদার পূঁজা, শিতলা পূঁজা, শিবপূঁজা ও কালীপূঁজা অনুষ্ঠিত হয়। ৩০ চৈত্র সন্ধালগ্নে চড়কতলা মন্দিরের সামনে কাটা গাছের লম্বা খুঁটির মাথায় আড়াআড়ি ভাবে সেট করা বাঁশে বাঁধা দড়িতে সংযুক্ত করা থাকে বড়শি। সেই বড়শি জীবন্ত মানুষের পিঠে ফুটিয়ে চড়ক ঘুরানো হবে। এবারো বড়শি ফোটানো হবে ওই গ্রামের বাসিন্দা খোকন বিশ্বাসের পিঠে। পূঁজা ও চড়ক মেলা উপলক্ষ্যে আদমদীঘি উপজেলা সদরের মাঝিপাড়া গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে জামাই-মেয়ে সহ আত্মীয়স্বজনের ব্যাপক সমাগম ঘটেছে। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: