আন্তর্জাতিক মে দিবস উপলক্ষে শ্যামনগরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ, মে ২, ২০২৩

এম কামরুজ্জামান, শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

প্রতিটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার অক্ষুন্ন থাকুক,দূর হোক সকল বৈষম্য” এপ্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে শ্যামনগরে আন্তর্জাতিক মে দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১লা মে (সোমবার) বিকাল ৫ টার সময় শ্যামনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স হল রুমে জাতীয় শ্রমিকলীগ শ্যামনগর উপজেলা শাখার আয়োজনে দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন সাতক্ষীরা-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস এম জগলুল হায়দার।
শ্যামনগর উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি এস এম কামরুল হায়দার নান্টু’র সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব জি এম আকবর কবীর, উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগ সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আলী মোল্যা, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক হাফিজ সরদার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি একরামূল হক লায়েস, সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান, শ্যামনগর মোটর সাইকেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাবের মিস্ত্রী, সাধারন সম্পাদক আব্দুল্যাহ আল মামুন, মাইক্রো শ্রমিকের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, শ্রমিক নেতা নুর মোহাম্মাদ মানিক প্রমুখ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন”শ্রমিকদের সকল ন্যায় সঙ্গত আন্দোলনে পাশে আছি। সরকার আসে সরকার যায় কিন্তুু আওয়ামীলীগ সরকার ছাড়া অন্য কোন সরকার শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন ও দাবীকে প্রাধান্য দেয়নি। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় শ্রমিকদের মূল্যায়ন করেছেন। আজ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা শ্রমিকদের ন্যায় সঙ্গত বিভিন্ন দাবিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। মূজুরী বৃদ্ধি করেছেন এবং শ্রমিকদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।”বিশ্বের কোটি কোটি শ্রমজীবি মানুষের অধিকার ও দাবি আদায়ের মহান ‘মে দিবস’ আজ। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা উপযুক্ত মজুরি আর দৈনিক আট ঘন্টা কাজের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।
মিল, কল-কারখানা তখন গিলে খাচ্ছিল শ্রমিকের গোটা জীবন। অসহনীয় পরিবেশে প্রতিদিন ১৬ ঘন্টা কাজ করতে হতো। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৬ ঘন্টা কাজ করে শ্রমিকদের জীবন বিষয়ে উঠছিল। সপ্তাহজুড়ে কাজ করে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য একেবারে ভেঙে পড়ছিল। শ্রমজীবি শিশুরা হয়ে পড়েছিল কঙ্কালসার। তখন দাবি উঠেছিল, কল-কারখানায় শ্রমিকের গোটা জীবন কিনে নেয়া যাবে না।
দিনে ৮ ঘন্টা শ্রমের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনের সময় ওই বছরের ১লা মে শ্রমিকরা ধর্মঘট আহবান করে। প্রায় তিন লাখ মেহনতি মানুষ ওই সমাবেশে অংশ নেয়। আন্দোলনরত ক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের রুখতে গিয়ে একসময় পুলিশ বাহিনী শ্রমিকদের মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে পুলিশের গুলিতে ১১ জন নিরস্ত্র শ্রমিক নিহত হন, আহত ও গ্রেফতার হন আরো অনেক শ্রমিক। পরবর্তীতে প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মধ্য থেকে ছয়জনকে আন্দোলনে অংশ নেয়ার অপরাধে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। কারাগারে বন্দিদশায় এক শ্রমিক নেতা আত্তহত্যাও করেন। এতে বিক্ষোভ আরো প্রকট আকারে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ১৮৮৬ সালে আমোরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের ম্যাসাকার শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে পালিত হয়।