আম্পানের পর যশোরে কালবৈশাখীর হানায় ফের ক্ষয়ক্ষতি

প্রকাশিত: ১:৫২ অপরাহ্ণ, জুন ৩, ২০২০

সালমান হাসান রাজিব

আম্পানের ক্ষত না শুকাতেই ফের ঝড়বৃষ্টির হানায় যশোরে বাড়িঘর ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মহাঘূর্ণি ঝড় আম্পানের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ অনেক ঘরবাড়ির এখনও মেরামত চলছে। এরই মধ্যে আবার গতকাল বুধবার রাতে আঘাত হানে কালবৈশাখি ঝড়। ঘন্টাখানেকের শক্তিশালী ঝড় সেই সাথে বৃষ্টিতে দাপটে জেলার অনেক জায়গায় আবারো কাচা ঘরবাড়ির ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। এবারও সবজির ক্ষেতের পাশাপাশি আম ও লিচুর ক্ষতি হয়েছে।
শক্তিশালী কালবৈশাখির দাপটে এদিনও আম্পানের আঘাতে নাজুক হয়ে পড়া অনেক টিনের বাড়ির চালা ফের উড়ে গেছে। ঝড়ো হাওয়ায় গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ে বাড়ির আশপাশের বিদ্যুতের তারও ছিড়ে যায়। তীত্র বাতাসে ফলবতী সব গাছ থেকে আম লিচু ঝরে পড়ে। অনেক জায়গায় সবজির ক্ষেতও আক্রান্ত হয়েছে।
যশোর সদরের ভাতুড়িয়া এলাকার তরিকুল ইসলাম জানান, আম্পানে তাদের রাইস মিলের টিনের চালা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সম্প্রতি মেরামতও শুরু করেন। কিন্তু চালার মেরামত শেষ না হতেই ফের মৌসুমি ঝড় এসে চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে।
শহরের রেলগেট এলাকার হালিমা বেগম, সুফিয়া খাতুনসহ বেশ কয়েক জন বলেছেন, আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ তাদের ঘরবাড়ি এদিনের কালবৈশাখি ঝড়ে আবারো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এদিকে আম্পানের তান্ডবের পর যশোরের অনেক এলাকায় এখন বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় রয়েছে। মোমবাতি ও হেরিকেনের আলোয় তারা রাত পাড়ি দিচ্ছেন। ভাঙাচোড়া, দোমরানো মোচরানো ঘরবাড়ির মেরামতও চলছে।
এমন পরিস্থিতিতে যশোরে ত্রাণ ও পুর্ণবাসন অফিস থেকে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। জানা গেছে, আম্পানে ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৫শ’ ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সেই সাথে ১ শ’ ১৫ একর সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। দুই হাজার ৮৫০ টি গৃহপালিত প্রাণী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন জানান, আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে আট উপজেলায় টিন বিতরণ চলছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ভেঙে যায় ঘর ঠিক করার জন্য প্রায় ১ হাজার ৪০০ বান টিল বরাদ্দ হয়েছে। এছাড়া খাদ্যসহায়তা হিসেবে ১০০ মেট্রিকটন চালও বিতরণ হচ্ছে।
তবে আম্পানে যশোরে অনেক সংখ্যক সবজির ক্ষেত আক্রান্ত হলেও মৌসুমি কালবৈশাখির প্রকোপে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। এমনটাই দাবি করেছে যশোরের কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান জানান, আম্পানের কারণে অনেক সবজির ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছিল। কিন্তু এরপরের হয়ে যাওয়া ঝড়বৃষ্টিতে সবজির ক্ষেতের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।