কথিত নেত্রী বিউটির ত্রাণ বাণিজ্য

প্রকাশিত: ৮:০৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১

জাহিদ হাসানঃ

গেল কিছুুদিন আগে বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেওয়া করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ ছিল অচল। সেই সঙ্গে কর্মহীন হয়ে পড়েছিলো দিনমজুরসহ অনেকেই। অথচ এদের একদিন কাজ না করলে ঘরে আগুন জ্বলতো না, না খেয়েই থাকতে হোত পরিবার নিয়ে। সেসময় সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহায়তা প্রদান করছেন অনেকেই। বেসরকারিভাবে কিছুটা সুষ্ঠু বণ্টন হলেও, সরকারের কঠোর অবস্থানের মধ্যেও সরকারিভাবে সহায়তা নিয়ে ববরাবরই কিছু অমানুষ তাদের স্বার্থ উদ্ধারে লুটেপুটে খেয়েছে অসহায় অনাহারদের খাবার গুলো।

চালচুরি, গমচুরি আর কম্বলচুরি খুঁজলে অহরহই পাওয়া সম্ভব এ দেশে। তাই বলে এই দূর্দিনে অনাহারে থাকা মানুষগুলোর ত্রাণ চুরি!!

জাতির পিতা ১৯৭৩ সালে আফসোস করে বলেছিলেন “সাত কোটি বাঙালির আট কোটি কম্বল, আমারটা গেল কই?”

১৯৭৩ থেকে আজ ২০২১ এরপরেও সেই অমানুষগুলো মানুষ হতে পারলো না। অসহায় দুস্থ মানুষদের রক্ত চুষে খেতেই হবে ওদের। ত্রাণের দেয়া চাল, ত্রাণের দেয়া অসহায় মানুষদের অনাহারের অন্ন লুটেপুটে নিতেই হবে। কবে মানুষ হবে ওরা!

তেমনি একজন কথিত নেত্রীর সন্ধান মিলেছে বেনাপোলে। নাম বিউটি বেগম,জন্মস্থান নড়াইল। ২০ বছর পূর্বে গৃহবধু হয়ে আসে বেনাপোলে।তবে সে সংসার টিকিনি দীর্ঘ সময়।এখন নায়েবের স্ত্রী হিসাবে পরিচিত,যদিও বিষয়টি নিয়ে আছে ধোঁয়াসা। দুইদিন আগে তার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বাণিজ্যের দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরই সাধারণ জনগণ সেই নেত্রীর নানা দুর্নীতি সম্পর্কে মুখ খুলতে শুরু করেছে। কিছুদিন আগে লকডাউনে সরকারি ত্রানের কার্ড বিতরণের দায়িত্ব পেলে তা থেকে উঠে আসে অনিয়মের তথ্য।

এবিষয়ে দূর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, কিছু দিন আগে বিউটি আমাকে ২ টি কার্ডের মালামাল বিক্রি করে তাকে টাকা দেওয়ার শর্তে ৩টি চাউলের কার্ড পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু আমি তার কথায় রাজি হয়নি।

একই গ্রামের লেবুরন জানান, আমি খুবই অসহায়, নেত্রী বিউটি আমাকে দিয়ে প্রায়ই ২/৩ টি কার্ডের মালামাল তুলিয়ে নেন। বিনিময়ে ১টি কার্ডের মালামাল আমি পায়।এ রকম বহু মহিলাকে দিয়ে এানের মাল তুলিয়ে নিজে নিতে দেখেছি।
দীঘিরপাড় গ্রামের আনোয়ারা বলেন, এই নেত্রী বিউটি ত্রাণের কার্ড নিয়ে করে অর্থ বাণিজ্য। তাকে কিছু টাকা দিলেই পাওয়া যায় এক সাথে ৫/৬টি কার্ড।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পোড়াবাড়ি গ্রামের এক মহিলা বলেন, আমাকে কয়েকটা কার্ড দিয়ে চাল তুলিয়ে নিয়ে, সব গুলো সে রেখে আমাকে একটা দেয়। এজন্য এখন আর আমি তার কোন কার্ড আর নিইনা।

এবিষয়ে বেনাপোল পৌরসভার এক কাউন্সিলর বলেন, মেয়রআমাদেরকে
ত্রাণ সহ বিভিন্ন কার্ড না দিয়ে। তার নিজস্ব নেতাকর্মী দিয়েয় এসকল কার্ড বিলি করেন। আমি বুঝিনা এমন দুর্নীতিগ্রস্ত মহিলা কিভাবে ৭০০/৮০০ ত্রাণের কার্ড পায়।

এবিষয়ে কথিত মহিলা নেত্রী বিউটির মোবাইলে কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।