কৃষকের ক্ষতি ঠেকাতে যশোরে মাঠ থেকে ন্যায্যমূল্যে সবজি কিনছে সেনাবাহিনী

প্রকাশিত: ১২:৩০ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০২০

যশোরে সবজির প্রচুর উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতিতে সবজি বাজারে তোলা কৃষকের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে উৎপাদিত সবজি মাঠেই পড়ে থাকছে। এতে মাঠভর্তি সবজি ক্ষেতেই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে কৃষকের এমন দুর্দিনে তাদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিল সেনাবাহিনী। সম্ভাব্য আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে কৃষকদের রক্ষার জন্য সরাসরি মাঠ থেকে সবজি কিনছে যশোর সেনানিবাস। দুঃসময়ে সেনাবাহিনীর এভাবে পাশে দাঁড়ানোয় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কৃষক। জানা গেছে, সেনাপ্রধানের অনুপ্রেরণায় কৃষকের কাছ থেকে সবজি কেনার এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাহিনীর ৪০টি ইউনিট মাঠে গিয়ে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে প্রয়োজনমত সবজি কিনে আনবে। গত কয়েকদিন ধরে এ প্রক্রিয়ায় সেনানিবাসের জন্য প্রয়োজনীয় সবজির চাহিদা মেটানো হচ্ছে। যশোর ক্যান্টনমেন্ট ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ৮৮ ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল নেয়ামুল হালিম খান জানান, যশোর সেনানিবাসের জন্য প্রচুর পরিমাণ সবজির চাহিদা রয়েছে। আর ঠিকাদাররা দৈনন্দিন চাহিদার সেই সবজির যোগান দিত। কিন্তু দেশের সাম্প্রতিক এই সংকটের মুহূর্তে সেখান থেকে সরে আসা হয়েছে। এখন সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সবজি কিনে চাহিদা মেটানো হচ্ছে। এর ফলে মধ্যস্বত্বভোগীরা যে মুুনাফা করত সেটি বন্ধ হওয়ায় কৃষকরা এখন লাভের মুখ দেখছেন। তিনি জানান, কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন না হন মূলত সেই লক্ষ্যেই সেনাবাহিনীর এ উদ্যোগ। করোনার প্রভাব থেকে কৃষকদের কষ্ট ও দুর্দশা লাঘবের জন্য সেনাপ্রধান তাদের এমনটি করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। করোনার কারণে লকডাউন থাকায় মানুষ এখন ঘরবন্দি। সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এক জেলার সাথে অন্য জেলার যোগাযোগ এখন তাই বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে পণ্যপরিবহন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এসব কারণে সবজির পাইকারি কারবারিরাও ব্যবসা অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছে। এমনকি হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় নিজ জেলাতেও সবজি সরবরাহের সুযোগও সীমিত। এমন অবস্থায় ভরা মৌসুমে উৎপাদিত পণ্য ক্ষেতেই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন সংকটের সময়ে কৃষকের লোকসান ঠেকাতে ন্যায্যমূল্যে সরাসরি মাঠ থেকে সবজি কেনা শুরু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যশোর ৫৫ পদাতিক ডিভিশন। সেনাপ্রধানের অনুপ্রেরণায় যশোর সেনানিবাসের ৪০টি ইউনিট আগামী এক মাস তাদের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদা অনুযায়ী সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সবজি ক্রয় করবে। বুধবার (২৯ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে এই ক্রয় কার্যক্রম। মূলত গ্রামের প্রান্তিক কৃষকদের ক্ষেত ও গ্রামের ছোট বাজার থেকে এ সবজি কেনা হবে। এভাবে আগামী এক মাস সবজি কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে করে কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হয় এবং করোনার প্রভাব থেকে কিছুটা হলেও তাদের মুক্ত রাখা যায়।