কোচের পেছনে বায়ার্নের খরচ ২৫০ কোটি!

প্রকাশিত: ১০:০৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২১

বায়ার্নের নতুন কোচ ইউলিয়ান নাগলসমান।
বায়ার্ন মিউনিখের এই এক গুণ। যাঁকে চায়, তাঁকে পেতে বেশি সময় নষ্ট করে না জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। সেটা খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে হোক বা কোচ। এর আগে রবার্ট লেফানডফস্কি, মারিও গতসা, হাভি মার্তিনেজ, লেওন গোরেৎস্কা, রেনাতো সানচেস, লুকাস এর্নান্দেস, দায়োত উপামেকানোর মতো খেলোয়াড়দের সঙ্গে তড়িঘড়ি করেই চুক্তি সেরে ফেলেছিল তারা। কোচের ক্ষেত্রেও তা–ই। নিকো কোভাচ, হান্সি ফ্লিক, কার্লো আনচেলত্তির মতো ম্যানেজারদের সঙ্গে তেমন গুঞ্জন ওঠার আগেই চুক্তি সম্পন্ন, অন্য কোনো ক্লাব সুযোগ পাওয়ার আগেই। এবার নিজেদের নতুন কোচ নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই পথে হাঁটল বায়ার্ন।

কালকেই মোটামুটি পাকা খবর এসেছিল, আরবি লাইপজিগের জার্মান কোচ ইউলিয়ান নাগলসমানকে মনে ধরেছে বায়ার্নের। বর্তমান কোচ হান্সি ফ্লিক মৌসুম শেষে ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর জায়গায় নাগলসমান আসবেন, এমন শোনা গিয়েছিল। সে খবর পাকা করতে বায়ার্ন চব্বিশ ঘণ্টাও সময় নিল না। জার্মান চ্যাম্পিয়নরা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে, আগামী মৌসুমে লেফানডফস্কি-নয়্যার-মুলাররা খেলবেন ৩৩ বছর বয়সী এই কোচের অধীনেই। নতুন কাজে যোগ দেবেন ১ জুলাই থেকে।

বায়ার্নের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি করেছেন নাগলসমান। এই মৌসুম শেষে যেন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়, সে জন্য ক্লাবকর্তাদের কাছে আরজি করেছিলেন বায়ার্নের বর্তমান কোচ ফ্লিক। সে আবদারটাও মেনে নিয়েছে বায়ার্ন। মৌসুম শেষেই তাঁর চুক্তি বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে ক্লাবটি।

আর বি লাইপজিগের ৩৩ বছর বয়সী এই কোচকে আনতে বেশ কষ্ট হয়েছে বায়ার্নের। প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব থেকে প্রায় ছিনিয়েই এনেছে নাগলসমানকে। সে জন্য বড় অঙ্কও খসিয়েছে বায়ার্ন। জানা গেছে, অঙ্কটা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৫০ কোটি টাকার সমপরিমাণ হতে পারে, যা কোচদের দলবদলের অঙ্কে বিশ্ব রেকর্ড। এক অর্থে, কোচদের দলবদলের ‘নেইমার’ হয়েছেন নাগলসমান। খেলোয়াড়দের দলবদলের বিশ্ব রেকর্ডটা নেইমারেরই দখলে কিনা! ২০১৭ সালে বার্সেলোনা থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে পিএসজি কিনে নিয়েছিল ২২ কোটি ২০ লাখ ইউরোতে। এর আগে পোর্তো আন্দ্রেস ভিলাস বোয়াসকে নিতে দেড় কোটি ইউরো খরচ করেছিল চেলসি।

বিভিন্ন বোনাস ও ক্লজ মিলিয়ে নাগলসমানের জন্য আড়াই কোটি ইউরো পকেটে পুরেছে লাইপজিগ। যে লাইপজিগকে গত দুই মৌসুম ধরে বায়ার্নের অন্যতম প্রতিপক্ষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন এই তরুণ কোচ। অর্থাৎ এক অর্থে এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছে বায়ার্ন। প্রতিপক্ষের শক্তি খর্ব তো করেছেই, নিজেদের শক্তিও বাড়িয়েছে।

১৮ এপ্রিল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে নাগলসমান অবশ্য তাঁর বায়ার্নে যেতে চাওয়ার গুঞ্জনে রাগ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘বলার মতো কিছুই নেই। আমার মতে কী হবে, অন্য কোথাও নিজেকে দেখতে চাই কি না এবং যা হচ্ছে না, সেসব ব্যাপার নিয়ে কথা বলে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ বানানোটা খুবই ভুল। আমার পক্ষে সম্ভব না এটা বলা যে লেনা গার্কের (জার্মান মডেল) সঙ্গে আমার কাল বিচ্ছেদ হচ্ছে। কারণ, তাঁর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্কই ছিল না কখনো। আমি দুঃখিত, এ ব্যাপারে (বায়ার্নে যাওয়া) কোনো নতুন খবর দিতে পারছি না। আগে যা বলেছিলাম, এবারও তা-ই। এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, কোনো প্রস্তাবও দেওয়া হয়নি। এ কারণেই আমি জানি না বায়ার্ন কী চায়। আমি বলেছি, আমার চাকরিদাতাদের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চাই না, এখনো তা-ই বলছি।’

কয়েক দিনের মাথায় নাগলসমানের উল্টোযাত্রার খবর তাই সে প্রবাদটার বৈধতাই দিল—যা রটে, তা কিছু হলেও বটে!