ডাঃ মোঃ রাইয়ান হাসার এবং ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান

প্রকাশিত: ৮:১০ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০২১

ফিলিস্তিন ইসরায়েল ইস্যুতে বিশ্ব উত্তপ্ত। আমাদের দেশে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত জনাব ইউসুফ রামাদান আছেন। আজ চলে গেলাম তার অফিসে। উনার সাথে আমার কথোপকথন সংক্ষেপে বাংলায় লিখছি। সব মিলিয়ে দ্বিপাক্ষিক কথা হয়েছিল ১৫ মিনিট।

আমিঃ আসসালামু আলাইকুম। আমি খুব খুশি আপনার ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও আমার জন্য এখন সময় দিয়েছেন।
তিনিঃ সালামের উত্তর দিয়ে বললেন আমিও আপনাদের সমর্থন, দোয়া, ভালোবাসা পেয়ে মুগ্ধ।
আমিঃ ফিলস্তিনে যেসব হচ্ছে সেসব আমরা কোনভাবেই সমর্থন করি না।
তিনিঃ জ্বি, আমি জানি। আপনাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আপনি যেন কি করেন বললেন? (অফিসে ঢোকার আগে একবার কথা হয়েছিল আমার পেশা নিয়ে)
আমিঃ আমি একজন চিকিৎসক। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কাজের সাথে যুক্ত আছি। আমাদের একটা সংগঠনও আছে। চিকিৎসক হলেও বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে নিয়মিত স্টাডি করি। ফিলিস্তিন ইসরায়েলের ঘটনাও পড়ার চেষ্টা করেছি। সেই ১৯৪৭ থেকে বিরোধ শুরু।
তিনিঃ ভেরি গুড। ইতিহাস জানাটা সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। জেনে ভাল লাগল আপনি এসব নিয়ে স্টাডি করেন। আপনাদের সমর্থন, দোয়া ও ভালবাসাটায় এখন আমাদের প্রয়োজন।
আমিঃ ফিলিস্তিনের হামাসের কার্যক্রমের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আর হামাস নেতার কোরআন তেলাওয়াতের একটা ভিডিও ফেসবুকে অনেক জনপ্রিয়। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে উনার কোরআন তেলাওয়াত অনেক পছন্দ করি।
তিনিঃ হুম। তিনি তো একজন ইমামও। আর ইসরায়েল যত যাই করুক আমাদের সাথে পারবে না।
আমিঃ আল আকসা, জেরুজালেম মুসলিম বিশ্বের কোন দাবী নয়। এগুলো মুসলিমদের অধিকার।
তিনিঃ আপনি ঠিক বলেছেন। আমরা বিশ্ববাসীর কাছে এটাই তুলে ধরছি।
আমিঃ জ্বি। আমাদের দেশের সাধ্য এবং সামর্থ্য দুইটিই সীমিত। তবে এদেশের ইসলাম প্রিয় মানুষ আপনাদের পাশে সবসময় আছে।
তিনিঃ সেটা তো আমি নিজেই দেখছি। আপনি অবাক হবেন অনেকে আমার অফিসে এসে অনেকে ৫ টাকাও দিয়ে যাচ্ছে। আর অফিসের বাইরে তো আপনি দেখতেই পাচ্ছেন এখন কী অবস্থা। সবাই সাধ্য মত টাকা দিয়ে যাচ্ছে।
আমিঃ ফিলিস্তিনে তো বাইরের ওষুধ বা খাবার বোঝাই করা কোন বাহনই ইসরায়েল ঢুকতে দিচ্ছে না। আর আর্থিক সহযোগিতা কি তাদের কাছে পৌছানো সম্ভব? ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য আমরা কোনটা করতে পারি? আমার প্রশ্ন অন্যভাবে কাইন্ডলি নিবেন না। আমাদের একটি সংগঠন আছে। যেটা ফিলিস্তিনের জন্য কাজে আসবে আমরা সেটাই করব। এজন্য প্রশ্নটি করলাম।
তিনিঃ ধন্যবাদ আপনার প্রশ্নের জন্য। আমি কিছু মনে করি নি। হ্যা, ফিলিস্তিনে এখন বাইরে থেকে সাহায্য পাঠানো খুবই কঠিন হয়ে গেছে। তবে বিভিন্ন চ্যানলের মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা এখনো পাঠানো যাচ্ছে যদিও সেটা অনেক কঠিন। এখন সব থেকে বেশি প্রয়োজন আপনাদের দোয়া।
আমিঃ অবশ্যই। আমরা সব সময় ফিলিস্তিনের জন্য দোয়া করি। আমরা চাই হামাস এবং মুসলিম বিশ্ব ইসরায়েলের কাছে মাথা নত না করুক। আর হামাস যে সাহসিকতার পরিচয় দিচ্ছে মাশা আল্লাহ।
তিনিঃ আপনি জেনে খুশি হবেন ফিলিস্তিন কখনো মাথা নত করবে না। আমাদের হাতে একটাই অপশন। ভিক্টোরি, ভিক্টোরি এবং ভিক্টোরি। তারা যতই চাপ প্রয়োগ করুক ফিলিস্তিনের মানুষ জিতবে ইনশাআল্লাহ। তারা হারতে শিখেনি।
আমিঃ খুব ভালো লাগলো আপনার কথা শুনে। আপনাদের জন্য আমরা দোয়া করব বেশি করে। আর ফেসবুকে তো আপনার একটা বিকাশ নাম্বার দেয়া হয়েছে। আমরা আলাদা ভাবে বা আপনার বিকাশ নাম্বারে আমাদের আর্থিক সহযোগিতা পাঠিয়ে দিব ইনশাআল্লাহ।
তিনিঃ ধন্যবাদ এই মনোভাব ব্যক্ত করার জন্য। তবে বেশি প্রয়োজন দোয়া।
আমিঃ অবশ্যই। আমরা দোয়া করব। আল্লাহ সহায় হন। ৫ মিনিটের কথা বলে ১৫ মিনিট সময় নিয়ে নিলাম। ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।
তিনিঃ আপনার মত একজন তরুণের সাথে কথা বলে আমারও ভালো লাগল। আপনি অনেক বড় হন। আপনাকেও ধন্যবাদ।
আমিঃ আজ তাহলে উঠি। ইনশা আল্লাহ আবার দেখা হবে।
তিনিঃ আল্লাহ হাফেজ।

আমি সালাম দিয়ে বের হয়ে গেলাম। তিনি আমাকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে সালামের উত্তর দিয়ে আবার ভিতরে ঢুকে গেলেন।

 

ডাঃ রাইয়ান হাসার এর ফেসবুক থেকে সংগৃহীত