তালায় আমার লোক বাদে কাউকে কোন ধরনের সহায়তা দেয়া হবে না

প্রকাশিত: ৬:২২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০২১

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:-
তালায় হতদরিদ্রের খাদ্য সহায়তা ১৫০০ কার্ড জোর পূর্বক কেড়ে নিয়েছে তালা সদরের ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেনের নির্দেশে তার নিজ কর্মীগন এবং গ্রামপুলিশ। প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা প্রকল্পের প্রায় এক হাজার পাঁচ শত বেশি পরিবারের চাউল সুকৌশলে আত্মসাৎ করার চেষ্টায় তালা সদর ইউনিয়নের অসহায় পরিবারের থেকে এ ১০ টাকা কেজি দরের চাউল বিতরণের কার্ড উত্তলন করা হয়।

ক্ষমতার জনগন জনগণই ক্ষমতা। তার কোন প্রতিফলন নেই, বাস্থবতা আজ মুখ থুবড়ে পড়েছে এ কোন নির্দয় পরিণতি তালা সদরের হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্যে । সাধারণ মানুষের সরকারী এই সহায়তার দশ টাকা মূল্যের কার্ড,যে কার্ড তালা সদরের চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন এর নির্দেশে কেড়ে নিয়ে বলছেন তাদের লোক হিসাবে কাজ করতে হবে। যারা তাদের লোক হিসাবে কাজ করবে না তাদের আমার ইউপি থেকে কোন সরকারী সহায়তা দেয়া হবে না ।

সরকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, “”শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ””এই প্রতিশ্রুতি কে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সারাদেশ ব্যাপী এই খাদ্য সহয়তা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার এই প্রকল্পটি চালু করেন এবং এটি সঠিকভাবে অসহায় পরিবারের মাঝে বিতরনের জন্য উপজেলার ইউএনও,ও খাদ্য অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এবং বলা আছে স্থানীয় সরকার যেন সহায়তা প্রদান করেন এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য। সুতরাং চাউল কে পাবে আর না পাবে এটি নিশ্চিত করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান কেউ না।

এলাকায় প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে তালা সদরের বিতর্কিত নির্বাচনের চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন এর আপন ভাই হলো এই চাউল প্রদানের ডিলার। এভাবে কার্ড নিয়ে নিজেরা টিপ স্বাক্ষর দিয় অবৈধ ভাবে চাউল উত্তালন করে আত্মসাৎ করে নিবেন।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে তালা সদরের ৭ নং ওয়ার্ডের সরকারি খাদ্য সহায়তা প্রদান প্রকল্পে ২১৪ টি পরিবারের দশ টাকার মূল্যের চাউলের কার্ড ছিলো কিন্তু বর্তমানে তার মধ্যে ১৮২ টি কার্ড নিয়ে নিয়েছে সরদার জাকির হোসেনের লোকজন ও গ্রামপুলিশ। ইউনিয়ন জুড়ে প্রায় ১৫০০ মত পরিবারের খাদ্য সহায়তা পাওয়ার কার্ড কেড়ে নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
অসহায় মানুষের আকুতিতে কোন কাজ হচ্ছে না তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অসহায় পরিবার বলেন।তারা আরও বলেন আমাদের নাম লিখলে মামলা হামলা করে আমাদের হয়রানির মধ্যে পড়তে হবে। সাধারণত মানুষ আরো জানান গ্রামপুলিশ ও সরদার জাকির হোসেন এর লোকেরা আরো বলেছেন পবিত্র কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করে সরদার জাকির হোসেন এর পক্ষে কাজ করতে হবে তাহলে সকলে চাউল পাবে তা না হলে কেউ কার্ড বা চাউল পাবে না।

এলাকায় সাধারণ মানুষ তার কার্ড ফেরৎ পাওয়ার আহ্বান করে তাদের কার্ড ফেরৎ পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই চাউল প্রদান বন্ধ করে রাখার জন্য ইউএনও তালা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর, এবং প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।

তালা সদর ইউনিয়নের জনগণের চেয়ারম্যান ও তালা সদরের সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম জানান। তালা সদর ইউনিয়নের প্রশাসনিক ও বিতর্কিত নির্বাচনের চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন তার পক্ষে কাজ না করলে তাদের কোন সরকারী সহায়তা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে পাবে না বলে সকলের কাছ থেকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে কার্ড কেড়ে নিয়েছেন। আর এখানে সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার কে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো বলেন প্রকৃত হতদরিদ্ররা সহয়তা পাওয়ার হকদার এবং তারা পাবে সরকারী সকল সুযোগ-সুবিধা। এছাড়া তিনি সকল অসহায় মানুষের অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছিলেন। জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া কার্ড গুলো ফেরৎ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহন ও তার আগ পর্যন্ত চাউল প্রদানের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে সরদার জাকির হোসেন এর সাথে কথা বলতে তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদের গিয়ে তাকে পাওয়া যাইনি । মোবাইল ফোন মারফত যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। জানা গেছে তার দ্বারা সংঘটিত সাম্প্রতিক নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার কারণে আইনের চোখ ফাকী দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

তালা উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোপাল চন্দ্র দাশ ঘটনায় সত্যতা স্বীকার করে জানান তার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ না করলেও কয়েক জন মোবাইল ফোন মারফত জানিয়েছেন তালা সদরের চেয়ারম্যান এর পক্ষ থেকে ১০ টাকা চাউল এর কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান এটি সরকারের একটি প্রকল্প যা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও খাদ্য অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করেন।এখানে স্থনীয় সরকারের কোন খবরদারি নেই তারা শুধু নির্দেশ প্রদান করবেন। তালা সদরের বিভিন্ন স্থান থেকে কার্ড কেড়ে নিয়েছে এটি সম্পূর্ণ বে- আইনি চেয়ারম্যান এর কোন ক্ষমতা নেই এটি রাইট নেই। তিনি বিষয়টি নির্বাহী কর্মকর্তা কে অবহিত করেছেন। এবং তাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।