তালায় ইটের ভাটায় জ্বালানি হিসাবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ

প্রকাশিত: ২:৫৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২২

বি এম বাবলুর রহমান (তালা-সাতক্ষীর)
তালায় ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করে জেলার অধিকাংশ ইটভাটাগুলোতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

শুধু তাই নয়, এসব ভাটা থেকে প্রতিনিয়ত মাসোয়ারা নেন এক শ্রেণির কথিত সাংবাদিকরা। শুক্রবার তালায় শাহাদাতপুর কপোতাক্ষ নদের তীরে মেসার্স এস এম এম ব্রিকস্ এ জ্বালানী হিসেবে পোড়াতে দেখা যায় কাঠ। এব্যাপারে ভাটার ম্যানেজার বলেন, কয়লার দাম বেশি তাই কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। আপনারা মালিকের সাথে কথা বলেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে তালা উপজেলার সীমানা ঘেঁষে কপোতাক্ষ নদের তীরে তালার খেশরায় গড়ে উঠেছে মেসার্স এস এম এম ব্রিকস্। এই ইঁটের ভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। সংবাদকর্মী উপস্থিতে ভাটার চিপনীর মধ্যে সংবাদকর্মী কে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ধামকি প্রদর্শন করেন ভাটা মালিকের কথিত শালা। দেশের এতো আইনের শাসন থাকলেও কার ছত্র ছায়ায় এসব কাঠ পোড়াচ্ছে তা বোধগম্য নয়। পরিবেশ মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ছে এ এলাকায়। পার্শ্ববর্তী খুলনা জেলার রাড়ুলী ইউনিয়নের বুরহানপুর গ্রাম যেটা তালা ও পাইকগাছা উপজেলার সীমানা। এই গ্রামের কোল ঘেঁষে ইট ভাটাটি অবস্থিত। কিভাবে পেলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আদেশ? ইটের ভাটার জন্য কোন ছাড়পত্র পেয়েছে কিনা সেটাও বাস্তবতার আলোকে বিশ্বাসযোগ্য নয়।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ অনুযায়ী বিনা লাইসেন্সে কেউ ইট তৈরি করতে পারবেন না। কোনো ব্যক্তি ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করতে পারবেন না। করলে তিনি অনধিক তিন বছরের কারাদ- বা তিন লাখ টাকা অর্থদ- অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে হাজার বাঁধার চোখ ফাঁকি দিয়ে দেদারসে কাঁচা গাছ কেটে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারংবার বলছেন ‘গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান’ তবে এভাবে যদি গাছ কাটা হয় তাহলে এই পরিবেশ বান্ধব শ্লোগানের অর্থ কি? রাড়ুলী বুরহান পুর এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভ্যানচালক জানান মাটি ও কাঠ সরবরাহের জন্য ছোট এই রাস্তা দিয়ে ট্রাক চলাচল করে গ্রামের ভিতরে বাচ্চা গুলো গাড়ির ভয়ে ভীত থাকে। সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারে না। একি এলাকায় একাধিক মানুষ বলেন ভাটায় কাঠ পোড়ানো কালো ধুঁয়া এতটাই যে তাদের চোখ জ্বলে কোন প্রকার বাড়িতে ঠেকা দায় হয়ে পড়েছে।
মেসার্স এস এম এম ব্রিকস্ এর মালিক মোঃ মিনারুল ইসলাম সানার কাছে কাঠ পোড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকর্মীদের পরিচয় জানতে চান এবং পরিচয় জানার পর ভাটার ম্যানেজার কে সংবাদকর্মীদের ম্যানেজ করতে বলে দ্রুত চলে যান। এব্যাপারে মিনারুল ইসলাম সানার মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ভাটায় কয়লা এবং কাঠ একসাথে পোড়ানো হচ্ছিলো। আগামীকাল থেকে কয়লা চলে আসবে। সাংবাদিকরা যা পারে লিখুক তাতে আমার কোন সমস্যা নেই।
এ বিষয়ে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাবু প্রশান্ত কুমার ঘোষ জানান, কাঠ পোড়ানো সরকারি আদেশ অমান্য করা। প্রকৃত অর্থে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে এমনটা প্রমাণ হলে অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।