তালায় ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তারের অপচেষ্টা অব্যাহত

প্রকাশিত: ৫:৩৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২১

সাতক্ষীরা:-প্রতিনিধি

তালা উপজেলার তালা সদর ইউপি নির্বাচন গত ২০ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটের আগের রাতে নেতাকর্মীদের হাতুড়ি পিটিয়ে ও বাড়ি বাড়ি গিয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনীর হুমিক চলিয়ে বিতর্কিত নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

ভোটগ্রহণের দিন তিনটি ভোটকেন্দ্র দখল ঘর লুট, বাড়িঘর ভাংচুর নেতা কর্মীদের হাতুড়ি পেটা করে মারাত্মক আহতসহ গোটা ইউনিয়ন জুড়ে ভোটার দের জিম্মি করে নিয়ে একতরফা ভোট গ্রহনের পরও জাতীয় পার্টির প্রার্থী এস.এম.নজরুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতিক ৭১১৯ ভোট, হাইব্রিড বিতর্কিত যুবলীগ নেতা সরদার জাকির হোসেন নৌকা প্রতিক ৭৮৮১ ভোট দেখিয়ে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী এস.এম. মশিয়ার রহমানকে আনারস প্রতীকে দেখানো হয়েছে ৩১২৪ ভোট।

২০১১-২০১৬ সাল পর্যন্ত তালা ইউনিয়ন সফলতার সাথে দুর্নীতিমুক্ত থেকে তালার শত বছরের বন্যার পানি নিষ্কাশন ডুমুরিয়া শালতা নদী খনন কর তালার জলাবদ্ধতা নিরসন করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এস.এম নজরুল ইসলাম। ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে ইউনিয়ন পরিষদের বাউন্ডারী ওয়াল ও দৃষ্টিনন্দন গেট নির্মাণ করে তালা বাসীকে তাক লাগিয় দেওয়া, পানি নিষ্কাশন কালভার্ট, বাজারের চাঁদনী, ইটের সোলিং,পানির ট্যাংক, পিচের রাস্তা ইটের রাস্তা অবহেলিত খানপুর গ্রাম বিদ্যুতায়ন ও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন সহ মানুষের বিপদে আপদে দলমতের উর্দ্ধে থেকে জনকল্যাণে নিবেদিত হয়ে কাজ করার জন্য দলমত নির্বিশেষে জনগন ভালাবেসে তাকে ভোট দেয়। ২০১৬ সালের নির্বাচনও সরদার জাকির হোসেন কারচুপির মাধ্যমে বিতর্কিত ফলাফলের দ্বারা নির্বাচিত ঘোষনা করা হয়। যে বিষয়টি সকল শ্রেণিপেশার মানুষ অবগত রয়েছেন।

তালা ইউনিয়ন গত ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন যেভাবে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়, কেন্দ্র দখল, মানুষের হাতুড়ি পেটা করা হয়েছে সেটি ১৯৭১ সাল পাক হানাদার বাহিনীও এমন অত্যাচার নির্যাতন তালায় চালায়নি। এসবের পরও ৩টি কেন্দ্র দখল ও ভায়ড়া আগলঝাড়া ভোট কেন্দ্র ৯টি বুথ প্রকৃত ফলাফল প্রকাশ করলে লাঙ্গল বিজয়ী হয়। তাই ঐ কেন্দ্রর প্রিজাইডিং অফিসার রেজাল্ট শীট সম্পূর্ণ গোপন করে এজেন্টদের জিম্মি করে বিকাল ৪ ঘটিকায় ভোট গ্রহন সম্পন হলেও সন্ধ্যা ৭ টায় মনগড়া একটি রেজাল্ট শীট তৈরী করে কেন্দ্রের মধ্যে দরজা দিয়ে চুপ করে বসে থাকেন। সন্ধ্যার ৭টার দিকে সরদার জাকিরের এক নেতা জাতীয় যুব সংহতি তালা উপজলার বহিষ্কৃত সভাপতি সরদার কবির আহমেদ এর নেতৃত্বে ৮/১০টি মোটর সাইকেল লোকজন উক্ত কেন্দ্রে প্রবেশ করার পর তিনি মানুসিক শক্তি ফিরে পান এবং মনগড়া রেজাল্ট প্রকাশ করে চলে যান। এই ঘটনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রধান নির্বাচন কমিশন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহাপরিচালক, বাংলাদশ পুলিশ হেড কোয়ার্টার , মহাপরিচালক, র‌্যাব প্রধান কার্যালয় , মাননীয় সরকার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনার, উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক, খুলনা রেঞ্জ, খুলনা, জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা, জেলা পুলিশ সুপার, সাতক্ষীরা, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিসার তালা মহাপরিচালক ডিজি এফআই, মহাপরিচালক, এন.এস.আই, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযাগ পুনঃ নির্বাচনের দাবীতে ৩টি কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল পূর্বক পুনঃ নির্বাচনের দাবী জানিয়ে লিখিত অভিযাগ করা হয়ছে।

নির্বাচন সমাপ্তির পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর তালার ভাড়য়া, শাহাপুর বাজারে বারুইহাটী গ্রামের বীরমুক্তিযাদ্ধা মোমিন মোড়লের ছেলে আবুল হোসেন মোড়লে (৩৮) হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়। আবুল হোসেন এর মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে উল্লাস করিতে করিতে চলে যায় সরকার জাকিরের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী। তার নিজ ব্যাবহিত মোটর সাইকের ভাংচুর করে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। মোটর সাইকেলটি এখনো থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় আবুল হোসেন মোড়লের স্ত্রী জাহানারা বেগম বাদী হয়ে তালা থানায় সরদার জাকির হোসেনকে ১নং আসামী করে ৪২ জনর নাম উল্লেখসহ মামলা রুজু করেন। তালা থানার মামলা নং-১০, তারিখ: ২২/০৯/২০২১ইং। আবুল হোসেন এখনো মারাত্মক অসুস্থ পঙ্গুত্বভাব দিনাতিপাত করছেন।
তাছাড়া ভোটের পরদিন মুড়াকলিয়া গ্রামর মোক্তার আলীর স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে মারপিট করে জখম করে এবং তার বাড়িঘর ভেঙ্গেদেয়। লাঙ্গল প্রতিক ভোট দেওয়ার অপরাধে খানপুর গ্রামর সামাদ সরদারের মৎসঘেরের বেড়ীবাঁধ কেটে দিয়ে মাছ লুট করিয়ে দেয়। মুড়াকলিয়া গ্রামের মোবারক সরদারের স্ত্রীকে পিটিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করে। দিনব্যাপী তান্ডব চালানোর পর সন্ধ্যায় সাংবাদিক নজরুল ইসলামর বাড়ীর সামনে ককটেল বোমা বিস্ফারণ ঘটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করা হয়। ভোটের আগের রাতে জেয়ালা নলতা গ্রামের হাসান আলীকে কুপিয়ে মৃত্যু ভেবে ফেলে রেখে যায়। ভোটগ্রহণের দিনে শিবপুর গ্রামের আশরাফ আলী খাঁর মাথায় কোপ মেরে আহত করে।

তিনটি কেন্দ্র পুনঃ নির্বাচন ও সন্ত্রাসী সরদার জাকির হোসেন সহ সকল সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবীতে ২৫ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে ইউনিয়নের হাজার হাজার নারী পুরুষ মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। নির্বাচনের পর সহিংসতা মামলায় সরদার জাকির পলাতক থাকা অবস্থায় ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ ও দলীয় লোকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হতদরিদ্রদের ১০ টাকা কেজি দরে মাসিক ৩০ কেজি চাউলের কার্ড “শেখ হাসিনার বাংলাদশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ” প্রকল্পের প্রায় ১৫০০ কার্ড উত্তালন করেন। কার্ড উত্তালনকারীরা কার্ড গ্রহনকালে বলেন, লাঙ্গল প্রতিকে ভোট দেওয়ার কারণে তোমাদের কার্ড থাকবে না। এই বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হয়। তালা উপজেলার নির্বাহী অফিসার অভিযোগ প্রাপ্তির পরই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করন। গত ১৭ অক্টাবর হতদরিদ্রদের মাঝে কোন প্রকার পরিবর্তন ছাড়াই পূর্ব কার্ডধারীদর মাঝ চাউল বিতরন শুরু করা হয়ছে যা চলমান রয়েছে।

সরদার জাকির হোসেন নির্বাচন পরবর্তী হামলা সহিংসতা মামলা থাকা ১৪ অক্টাবর উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হয়ে বাড়িতে ফিরে পুনঃরায় তান্ডব শুরু করেন। ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন শেষ হওয়ার পর প্রায় এক মাস অতিবাহিত হতে চলেছে। গত ১৫ অক্টাবর তালা সদরের মাঝিয়াড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কাপড় দিয় ঘেরা বাশ দিয়ে তৈরী নৌকার দুই মাথায় পরিকল্পিতভাব আংশিক পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি উদ্দেশ্য প্রণাদিত মামলা তৈরীর জন্য রাতের আঁধারে কাল্পনিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে। তার পক্ষীয় সমর্থকদের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করছেন সরদার জাকির। ১৭ অক্টাবর হতদরিদ্রদের চাউল বিতরণকালে গরীব মানুষেরা হাজির হলে তাদের সামনে একটি ব্যানার ঝুঁলিয় দিয়ে নৌকা পুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ শিরানাম মানবন্ধন করে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা। যা সম্পূর্ণরুপ পরিকল্পিত ও সাজানো নাটক। উদ্দশ্য নজরুল ইসলামসহ তার পক্ষীয় সমর্থকদের বেকায়দায় ফেলানো।

বিগত এমপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী এ্যাড: মোস্তফা লুৎফুল্ল্যহ কে বিজয়ী করতে জাতীয় পার্টির সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখ্ত এর সমর্থনে নৌকার পক্ষে কাজ করেন জাতীয় পার্টির তালা উপজেলা সভাপতি নজরুল ইসলাম। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ঘোষ সনৎ কুমারের পক্ষেও নেতাকর্মী নিয়ে কাজ করেন।

তালায় ত্রাস সৃষ্টিকারী গডফাদারের নেতৃত্বে নৌকা প্রতিক পরাজিত করার জন্য বর্তমান চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন সহ এই সন্ত্রাসী অধিকাংশ সদস্য নৌকা পরাজিত করার জন্য আনারস প্রতীকের সমর্থন কাজ করেন। জাতীয় পার্টির পুনঃ সমর্থনের কারণ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ঘোষ সনৎ কুমারকে পরাজিত করা যাচ্ছে উপলদ্ধি করে ভোটের তিনদিন আগে গফফার সরদার জাকির হোসেনের নেতৃত্বে ১৫/২০টি মোটর সাইকেল মাঝিয়াড়া বাজার রাত ৯টার দিক শত শত মানুষের উপস্থিত নজরুল ইসলাম কে হাতুড়ী পিটা করার উদ্দশ্যে ঘিরে ফেলে। হাতুড়ী উঁচু করে মারতে উদ্যত হয়ে বলে, তুই জাতীয় পার্টি করিস তোর মোটর সাইকেলে নৌকা প্রতীক কেন ? কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে রয়েছে আমাদের দলীয় প্রার্থী না থাকায় সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছি। ভোটের পর দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান এই সন্ত্রাসী জাকির বাহিনী। ঘটনাটি বাজারের শত শত মানুষের সামনেই ঘটে।

বর্তমানে নৌকা পুড়িয়েছে মর্মে কথিত অভিযোগ নিয়ে তালা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন কথিত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বিশ্বাস। যিনি প্রথম জাতীয় পার্টি তারপর বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এখন আওয়াম লীগ করছেন। এই কথিত মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বিশ্বাস তালা উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে আনারস প্রতীকে নির্বাচন করেছিল। নৌকা বিরাধী লোকেরই এখন নৌকা পোড়ানোর নাটক সাজিয়ে তালা থানায় লিখিত অভিযাগ দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্তধীন রয়েছে।

তালা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও তালা ইউনিয়ন নির্বাচনের লাঙ্গল প্রতিকের প্রার্থী এস.এম নজরুল ইসলাম বলেন, একটি অরাজকতা পরিস্থিতি শুরু করতে উঠেপড়ে লেগছে সরদার জাকির ও তার পটুয়া বাহিনী। আমার কোন নেতাকর্মী কখনো কোন প্রার্থীর পোষ্টার, ব্যানার, ফেস্টুন বা কোন প্রতীকে কখনো হাত দেয়নি আর ভবিষ্যতেও দিবে না। বরং এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গোটা ইউনিয়ন জুড়ে আমার ব্যানার ফেস্টুন গুলো ছিড়ে ছিল। এটি নিকৃষ্ট মানুষের পরিচয় ছাড়া কিছুই ন। ভোটের এক মাস পর এখন নিজেরাই পরিকল্পিতভাবে একটি বাশ ও কাপড়ের তৈরী নৌকার দুই মাথা পুড়িয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করে আমাকে সহ আমার কর্মী সমর্থকদের মামলা দিয়ে হয়রানি করতে চায়। আমি ঘটনাটি আইন প্রয়াগকারী সংস্কার বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। নাটকীয়তায় পড়ে যেন কোন নিরীহ মানুষকে হয়রানীর স্বীকার না হতে হয় সেই ব্যাপারে হস্তক্ষপ কামনা করছি।