দেশের প্রথম রেড জোন কক্সবাজার

প্রকাশিত: ৬:১৮ অপরাহ্ণ, জুন ৫, ২০২০

 

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কক্সবাজার পৌর এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন করেছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।

 

শুক্রবার (৫ জুন) বিকালে এ সংক্রান্ত একটি জরুরী বিজ্ঞপ্তি জারি করে শনিবার থেকে ২০ জুন পর্যন্ত পৌর এলাকা লকডাউনের আওতায় থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ কার্যকর ও অধিকতর দক্ষতার সাথে নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমগ্র পৌরসভাকে রেড জোনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রেড জোনে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক বিবেচনায় ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত নিম্নবর্ণিত নির্দেশনা প্রদান করা হল। কোভিড ১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে জনস্বার্থে এ নির্দেশনা প্রদান করা হল।

১. রেড জোন এলাকায়-
ক. সকল প্রকার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। সকল জনসাধারণ আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করবে।
খ. সকল ব্যক্তিগত ও গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বহনকারী হালকা ও ভারী যানবাহন রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি গাড়ি চলাচলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি গ্রহণ করবে। এম্বুলেন্স, রোগী পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিবর্গের (অনডিউটি) পরিবহন, কোভিড-১৯ মোকাবেলা ও জরুরী সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাড়ি এর আওতার বাইরে থাকবে।

গ. সকল প্রকার দোকান, মার্কেট, বাজার, হাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র রবিবার ও বৃহস্পতিবার কাঁচা বাজার ও মুদি দোকান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। ঔষধের দোকান এর আওতার বাইরে থাকবে।
ঘ. কেবলমাত্র কোভিড ১৯ মোকাবেলা ও জরুরী সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে খোলা থাকবে। কেবলমাত্র রবিবার ও বৃহস্পতিবার ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ খোলা থাকবে। সকল হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও কোভিড ১৯ মোকাবেলায় পরিচালিত ব্যাংকিং সেবা প্রদান এর আওতার বাইরে থাকবে।
ঙ. জরুরি সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচিত সংবাদকর্মীদের রেড জোনে কাজ করার নিমিত্ত কক্সবাজার প্রেস ক্লাব কর্তৃক প্রদত্ত ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচিতি পত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় রেড জোনে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কক্সবাজার সদর কর্তৃক প্রদত্ত ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচিতি পত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে।
চ. সকল প্রকার গণপরিবহন টার্মিনাল রেড জোনের বাইরে স্থানান্তর করতে হবে।
ছ. প্রকাশ্য স্থানে বা গণজমায়েত করে কোন প্রকার ত্রাণ, খাদ্য সামগ্রী বা অন্য কোন পণ্য বিতরণ করা যাবে না।
এই উদ্দেশ্যে গঠিত ওয়ার্ড কমিটিসমূহ নির্দেশনাবলী কঠোরভাবে বাস্তবায়নে দায়িত্বপালন করবে।
উল্লেখ্য, গত ৬৩ দিনে মোট ৭ হাজার ৩৫১ জন সন্দেহভাজন রোগীর করোনা ভাইরাস টেষ্ট করা হয় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবে। তার মধ্যে ৯৫৮ জনের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। এতে কক্সবাজার জেলার রয়েছে ৮৭৭ জন। যার মধ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্ত কক্সবাজার সদর উপজেলায়। যেখানে ৩৬৪ জন শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া মহেশখালীতে ৩৪ জন, টেকনাফে ৪১ জন, উখিয়ায় ১১০ জন, রামু ৫৩ জন, চকরিয়ায় ১৮৯ জন, কুতুবদিয়ায় ৩ জন এবং পেকুয়ায় ৪৭ জন রয়েছে। এর সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৩৫ জন রোহিঙ্গা। অন্যান্যরা কক্সবাজার জেলার নিকটবর্তী বান্দরবান জেলার বাসিন্দা এবং চট্টগ্রামের চাঁদগাঁও, সীতাকুঞ্জ, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার বাসিন্দা।