প্রথম আরব দেশ হিসাবে মঙ্গল গ্রহে যান পাঠাতে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত!

প্রকাশিত: ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২০

মঙ্গল গ্রহে যান  পাঠানো বর্তমানে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের প্রধান আগ্রহ বলা যায়।  এর আগে ৫১টি মঙ্গল অভিযান হয়েছে, তার মধ্যে সফল হয়েছে মাত্র ২১টি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইউরোপীয়ান মহাকাশ সংস্থা৷

সেই আট শতাব্দী আগে, এখনকার সময়ের অনেক উন্নত দেশের চেয়েও অগ্রসর ছিলেন আরবের বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সেই গবেষণা, বিজ্ঞান যেন ভুলতে বসেছে মুসলিম দেশগুলো। বিজ্ঞান থেকে পিছিয়ে পড়েছে বহু পথ।

এবার যেন মুসলিম বিজ্ঞানীদের হারানো সেই গৌরব ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছে আরব আমিরাত। নতুন এক তথ্য জানতে মঙ্গলগ্রহ অভিযানে নামছে দেশটি।

বিবিসির খবরে বলা হয়, মানবহীন মহাকাশযানটির নাম ‘আমাল’। পাঁচ বছরের মতো সময় নিয়ে এটি তৈরি করেছে আরব আমিরাত। যাতে আগামী সপ্তাহে জ্বালানি তেল ভর্তি করা শুরু হবে।

সবকিছু ঠিক থাকলে ৪৯৩ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মঙ্গলগ্রহে পৌঁছাতে মহাকাশযানটির সময় লাগবে আনুমানিক সাত মাস।

১৪ জুলাই জাপানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত দ্বিপ তানেগাশিমা থেকে মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করার কথা রয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রকৌশলীদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছে। তাই ইতোমধ্যে একবার এই যাত্রা পিছিয়েছে।

মঙ্গলগ্রহে ৬৮৭ দিনে এক বছর হয়। এই পুরো সময় ধরে মহাকাশযানটি মঙ্গলগ্রহেরে কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করবে। মঙ্গলগ্রহেরে কক্ষপথ একবার ঘুরতে সময় লাগবে ৫৫ ঘণ্টা।

মহাকাশযানটিতে তিন ধরনের ‘সেন্সর’ থাকবে। যার কাজ হবে মঙ্গলগ্রহের জটিল বায়ুমণ্ডল পরিমাপ করা। মহাকাশযানটিতে খুব শক্তিশালী রেজুলেশন সম্বলিত একটি ‘মাল্টিব্যান্ড’ ক্যামেরা থাকবে।

যা সূক্ষ্ম বস্তুর ছবি তুলতে সক্ষম। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগ ও নিম্নভাগ পরিমাপ করার জন্য থাকবে একটি ‘ইনফ্রারেড স্পেকটোমিটার’। এটি তৈরি করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি।

তৃতীয় আরেকটি সেন্সর মঙ্গলগ্রহের অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের মাত্রা পরিমাপ করবে। গ্রহের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করবে ‘আমাল’ মহাকাশযান।

প্রকল্পের পরিচালক সারাহ আল আমিরি জানিয়েছেন, এই মিশনের অন্যতম কাজ হলো পানি তৈরিতে দরকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে কেন থাকতে পারছে না তা বোঝার চেষ্টা করা।

যুক্তরাজ্যের সায়েন্স মিউজিয়াম গ্রুপের পরিচালক স্যার ইয়ান ব্ল্যাচফোর্ড বলেছেন, ‘এর আগে যত মহাকাশযান মঙ্গলগ্রহে পাঠানো হয়েছে সেগুলো ভূতত্ত্বের দিকে মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছে। কিন্তু এবার মঙ্গলগ্রহের জলবায়ু সম্পর্কে একটি সামগ্রিক চিত্র পাওয়া যাবে।’

মহাকাশবিজ্ঞানে আরব আমিরাতের যোগসূত্র নতুন নয়। গত বছর রাশিয়ান একটি মহাকাশযানে করে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে গিয়েছিলেন আমিরাতের প্রথম কোন নাগরিক।

তবে প্রথম আরব হিসেবে মহাকাশে গেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ সুলতান বিন সালমান আল-সদ। ১৯৮৫ সালে মার্কিন একটি মহাকাশযানে করে তিনি গিয়েছিলেন।

যদি এই মিশন সফল হয় তবে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেবে দুবাই। আর জানিয়ে দেবে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের দিক থেকে সামনের সারিতে ছিলেন মুসলিম বিজ্ঞানীরা।