বিজয়ের তান্ডবের বেড়াজালে অবরুদ্ধ তালার গণমানুষ

প্রকাশিত: ৯:১১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:

সদ্য সমাপ্ত প্রথমধাপের ইউপি নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তালার সাধারণ মানুষ ও কৌশলগত কারণে পরাজিত প্রার্থী সহ কর্মী সমার্থকরা।

দেশে মহামারির করোনা সংক্রমণ এর কারনে লকডাউন থাকায় নির্বাচনে দিন বারবার বর্ধিত হয়ে সর্বশেষ গত ২০ শে সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় সাতক্ষীরা জেলার তালা কলারোয়া উপজেলার ২৩ টি ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচন। এই ধারাবাহিক শুরু হয় তালার ১১টি ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচন আর এই নির্বাচনে তালা সদর ইউনিয়নে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে শেষ হয়েছে বিতর্কিত নির্বাচন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে প্রথমধাপের ইউপি নির্বাচন গত ১১ এপ্রিল তালা সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন সরদার জাকির হোসেন, মহাজোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টি থেকে তালা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। চার দলীয় ঐক্যজোটের ব্যানারে কোন প্রার্থী না থাকালেও ছায়া প্যানেল নিয়ে বিগত দুই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা জামায়াতের প্রার্থী এবার সতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে এ্যাড, এস এম মশিয়ার রহমান আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। ত্রিমুখী নির্বাচনী লড়াইয়ে জমজমাট হয়ে ওঠে তালা সদর ইউনিয়ন, জেলা ও ভিন্ন জেলায় চায়ের কাপে ঝড় ওঠে তালা সদর ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচন নিয়ে।
তিন প্রার্থীর মধ্যে মূলতঃ লাঙ্গল ও নৌকার প্রচার প্রচারণা তুঙ্গে থাকে। আর সেখানেই প্রশ্ন বিদ্ধ হয়ে ওঠে ১১ এপ্রিল নির্বাচন কয়েক দিন বাকী থাকতে। তার মূল কারণ ছিলো লাঙ্গল প্রতীক এর সমার্থক দের মোটর শোভাযাত্রায় তালার খানপুর ঋষিপাড়ায় পিছনদিকে দিয়ে প্রকাশ্য হামলা চালায় নৌকার প্রার্থী সরদার জাকির হোসেন সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এর এই হামলায় সাংবাদিক নজরুল ইসলামের ১০-১২ টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে বিনষ্ট করে দেন। আহত হয়েছিলেন সাধারণ জনগণ তার মধ্যে অনুসন্ধানে জানা গেছে উপজেলার মুড়াকলিয়া গ্রামের ওজিয়ার রহমান মারাত্মক ভাবে আহত হয়ে যাই। শুধু এখানেই শেষ নয় সাথে সাথে ঋষি পাড়ায় চলে তান্ডব বাড়ি ঘর ভাংচুর করে ত্রাস সৃষ্টি করে অমানবিক নির্যাতন শুরু করে এই সরদার জাকির ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।এসময় বাড়িঘর ভাংচুর ঠেকাতে আহত হয়েছিলেন স্বপদ দাশ,যাদব দাশ ও বিধান দাশ, ও আমাপতি দাশ।
এত অত্যাচার নির্যাতনের কোন প্রকার সূরহা পেলেন না লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা প্রার্থী। কিন্তু জনগণের বাঁধ ভাঙা জনজোয়ার নিমজ্জিত হয়ে গেল করোনা ভাইরাস জনিত কারনে,বন্ধ হয়ে গেল নির্বাচন।
নিস্তেজ হয়ে পড়লো নির্বাচনী এলাকা কিন্তু থেমে থাকলো না কোন প্রার্থী ।
সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জানা গেছে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা প্রার্থী চেয়ারম্যান থাকাকালীন তালাকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ উন্নয়ন করেছেন। তিনি মূলত এগিয়ে ছিলেন তালাকের স্থায়ী জলাবদ্ধতার নিরশন করা।প্রতিটি ওয়ার্ড কে প্রদেশিত সরকার ব্যাবস্থা গ্রহনের প্রতিশ্রুতি প্রদান,ও সকলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি যা ভোটাররা যাকে ইচ্ছে ভোট দিবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য দল মত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা কামনা করা।
এদিকে তালা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নবাগত আওয়ামীলীগ ( হাইব্রিড) সরদার জাকির হোসেন তিনি নির্বাচনে নৌকায় বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে এজন্য যা করার করতে হবে। চেয়ারম্যান হতে মরিয়া হয়ে পড়েন। শুরু হলো ২০ শেষ সেপ্টেম্বর নির্বাচন। এবার নির্বাচনে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করে সরদার জাকির হোসেন ভোটারদের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করা তার মূল কৌশল হিসেবে বেছে নেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা ভোটাররা একতাবদ্ধ হয়ে গেল। শুরু করলেন সরদার জাকির হোসেন নতুন উদ্যোগ নজরুল ইসলাম এর পর সভা পন্ডপ করা। তালা বি দে সরকারী স্কুল মাঠে লাঙ্গল প্রতীক এর ৮-০৯-২০২১ তারিখে পথসভা অনুমতি চাওয়া কে হটিয়ে ১২-০৯-২০২১ তারিখে আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৮ ই সেপ্টেম্বর সরদার জাকির এর জনসভার প্রস্তুতি গ্রহনেও সফলতা না পেয়ে। তার সন্ত্রাসী বাহিনী মাঠে নামিয়ে দিতে কোন প্রকার বিলম্ব করেন নি। ১৮ ই সেপ্টেম্বর লাঙ্গল প্রতীক প্রাচার মাইক সহ ইজিবাইক চালককে উপর আক্রমণ ভাংচুর।একই সাথে খানপুর পুজামন্ডপ ভাংচুর করে তারা নজরুল ইসলামের পথসভা উদ্দ্যেশে আসতে জনগন কে হাতুড়ি পিটিয়ে আহত ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করলেও কোন প্রকার সমস্যা হয়নি তাদের। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তালার সাধারণ মানুষ। ১৯ শে সেপ্টেম্বর রাতে সরদার জাকির হোসেন এর আরেক ভাই আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত সরদার মশিয়ার রহমান ও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার হওয়া সরদার কবির আহমেদ এর নেতৃত্বে একাধিক সংবদ্ধ দল গ্রামে গ্রামে ঘুরে লাঙ্গল প্রতীক এর সমার্থক দের মামলা হামলার হুমকি অব্যাহত রাখেন বলে সত্যতা পাওয়া গেছে।

২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন ও দিনে সকালে তাদের ১ নং ওয়ার্ডের আঠারোই দুটি কেন্দ্রে লাঙ্গল প্রতীকে পোলিং এজেন্ট দের মারধর করে কাগজ পত্র কেড়েনিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে নিজেরাই একক আধিপত্য বিস্তার ঘটায়। সরদার জাকির হোসেন এর নিজ কেন্দ্র বারুইহাটি কেন্দ্রে লাঙ্গল প্রতীকে ভোটার দের ভোটকেন্দ্র প্রবেশ করতে না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিন টি কেন্দ্র দখল করে নিয়ে সামান্য কয়েকশ ভোটে বিজয়ী হয়ে শুরু করেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা কর্মীদের মারধর ২১ শে সেপ্টেম্বর রাতে জাপা নেতা আবুল হোসেন কে হত্যার উদ্দেশ্যে হাতুড়ি ও হকিষ্টিক দিয়ে পিটিয়ে হত্যা নিশ্চিত ভেবে উল্লাস করেন।
আহত আবুল হোসেন এখনো মৃত্যু পথযাত্রী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
বিজয়ী প্রার্থীর সন্ত্রাসী তান্ডবে লাঙ্গল প্রতীক এর হাজার হাজার সমার্থক নির্বাচনে কাজ করে আজ নির্বাসনে চলে গেছেন। ভাংচুর করা হচ্ছে বাড়ি ঘর। বিজয়ের তান্ডবেব বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে গেছে তালা সদরের হাজার হাজার নিরীহ মানুষ।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম জানান তার নির্বাচনী এলাকার নেতা কর্মীরা এখন জীবন বাঁচাতে মরিয়া । তার লোকজন এখন প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এছাড়া তার নেতা কর্মীদের উপর এই নির্যাতনকারী দের আইনের আওতায় আনার দাবি জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।
সরদার জাকির হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।