বেনাপোল পৌরসভার ত্রান সমন্বয়কারীর বিরুদ্ধে অর্থ অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৯:৪১ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২১

বেনাপোল পৌরসভার অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে গত ৮ই মে প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলের সহয়তায় ৯টি ওয়ার্ডে ৪৬২১ জনকে ৪৫০ টাকা করে সর্বমোট ২০৭৯৪৫০ টাকা ঈদ উপহার নগত অর্থ প্রদান করা হয়েছে। আর এই ঈদ উপহারের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪নং কাগজপুকুর ওয়ার্ডের ৫০০ জনকে দেওয়া টাকার বিভিন্ন অনিয়ম মিলেছে পৌরসভার ত্রান সমন্বয়কারী শুকুমার দেবনাথের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১১ই মে) কাগজপুকুর ৪ নং ওয়ার্ড ঘুরে মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলের নগত অর্থ বিতরণের বিভিন্ন অনিয়ম। ঘটনাস্থল থেকে জানা গেছে বেনাপোল পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের হত দরিদ্রদের তালিকার সমন্বয় করেছেন শুকুমার দেবনাথ। তিনি বেনাপোল পৌরসভার পার্টটাইম স্পটস কর্নারের দ্বায়িত্ব এবং পৌর মেয়রের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করছেন।

বেনাপোল ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মহিলা কর্মি নুরজাহান জানান, আমাদের ওয়ার্ডে ৫০০ জন দরিদ্রদের প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার প্রদান করেছেন পৌরসভার পক্ষ থেকে কিন্তু আমাদের ওয়ার্ডে যে সব দরিদ্রদের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে তারা টাকা পাননি। সে জন্য আমি পৌরসভায় গিয়ে সুকুমার দাদাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমার সাথে অশ্লীল ভাষায় খারাপ ব্যবহার করেন। এছাড়া এই ওয়ার্ডে অনেকের ডাবল ডাবল স্লিপ পেয়েছেন। পরে আমাকে অন্য লোকের নামে দুইটি কার্ড প্রদান করেন সুকুমার দাদার লোক নাছির উদ্দীন বাবু। তাছাড়া জানাজানি হলে কিছু কার্ড পৌরসভায় জমা দিয়েছে বাবু।

ঈদ উপহারের বিষয়ে ৪ নং ওয়ার্ডের কোলনীর বাসিন্দা সেলিম হোসেন জানান, যেখানে সাধারন হত দরিদ্র মানুষ ১টি কার্ড পাচ্ছেন সেখানে কোলনীর মৃত আঃ রবের নামে ৪টি কার্ড হয়েছে। বিষয়টি এলাকার দরিদ্র মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এছাড়াও প্রকৃত হত দরিদ্রদের কার্ড না দিয়ে তালিকায় অনেক স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে।

বেনাপোল পৌরসভার নারী নেত্রী বিউটি বেগম জানান, বেনাপোল ৪ নং কাগজপুকুর ওয়ার্ডের জন্য আমার কাছ থেকে সুকুমার দেবনাথের কথা বলে ৬০ জনের একটি তালিকায় স্বাক্ষর করিয়ে নেই উক্ত ওয়ার্ডের নেতা নাছির উদ্দিন (বাবু)। কিন্তু ৬০ জনের মধ্যে মাত্র ২২ জনের নগত টাকার কার্ড প্রদান করেছে। বাকি কার্ড না পেয়ে উক্ত ওয়ার্ডের নারী নেত্রীরা আমার কাছে অভিযোগ জানালে আমি মেয়র মহোদয়কে জানায়,তখন তিনি লিষ্ট ভুক্তদের ডেকে নিজের তহবিল থেকে কিছু টাকা প্রদান করেছেন।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান, শুকুমার দেবনাথের মতো একজন অর্থ লোভী মানুষ কিভাবে পৌরসভার এত বড় দ্বায়িত্ব পালন করে তা আমার বোধগাম্য নয়। এর আগে ২০১৪ সালে এ আর সিমেন্টের অর্থ প্রতারনার মামলায় তিনি জেল খেটেছেন সাড়ে ৮ মাস। তাছাড়া মন্দিরের অর্থ তসরুফেরও অভিযোগ আছে তার নামে। পৌরসভার কোন কর্মকর্তা না হয়েও পাচ্ছেন বেতন ভাতা।

শুকুমার দেবনাথের মুঠোফোনে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শুধু মাত্র পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের সমন্বয়কারী হিসাবে কাজ করেছি। টাকা আত্মসাৎ কিংবা দুর্নীতির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন এটা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট যদি কারও নামের কার্ডের অর্থ মেরে থাকি তাকে সাথে নিয়ে এসে প্রমাণ। দিন। পৌরসভায় কি দ্বায়িত্ব পালন করছেন জানতে চাইলে বলেন, আমি পৌরসভার স্পর্টস কর্ণারের পার্টটাইম কাজ করি এছাড়াও মেয়রের রাজনৈতিক সহযোগী হিসাবে কাজ করে থাকি। পৌরসভা থেকে বেতন পাওয়ার বিষটি জানতে চাইলে বলেন, মাস্টার রোলে সামান্য কিছু বেতন পাই।

এ বিষয়ে কাউন্সিলর আমিরুল ইসলামকে মুঠোফোনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের সমন্বয়কারী সুকুমারের নেতৃত্বে আমার ৪ নং কাগজপুকুর ওয়ার্ডে ১জন পৌর কর্মকর্তা ও ওয়ার্ডের নেতা নাছির উদ্দীন বাবু,মিন্টু,বাবলুকে নিয়ে লিষ্ট তৈরী করেছে। সেখানে কেমন শ্রেনীর লোকেদের নাম দেওয়ার এ বিষয়ে আমাকে প্রাধান্য দেওয়া হইনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেনাপোল পৌরসভার সচিব রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।