বড়াইগ্রামে নিজেদের জমি দখলে নিতে পারছে না আ’লীগ নেত্রী রত্না, উল্টো অপপ্রচার ও হয়রানীর শিকার।

প্রকাশিত: ৬:০৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১১, ২০২১

নিজস্ব প্রতিনিধি।
নাটোরের বড়াইগ্রামের বাগডোব বাজারস্থ নিজেদের জমি দখলে নিতে পারছে না স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেত্রী রত্না খাতুন। অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে জমি উদ্ধার করতে গেলে ওই নেত্রী ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অপপ্রচার, মিথ্যা অভিযোগ সহ নানা ধরণের হয়রানীর শিকার হচ্ছে। রবিবার দুপুরে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রত্না খাতুন জমি দখলমুক্ত করতে এবং তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যাচার সহ হয়রানী বন্ধ করার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আমার শ্বাশুড়ি নুরজাহান বেগম ১৯৯৯ সালে বাগডোব বাজারের ৩৬১ দাগে ইদ্রিস আলীর পৌনে পনের শতক জমির কাত থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে রাস্তা সংলগ্ন ২.৫ শতক জমি কিনে ভোগ দখল করে আসছেন। অপরদিকে, ইদ্রিস আলীর একই দাগের পৌনে ১৫ শতক জমি থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে রাস্তাবাদ ১০ শতক জমি বাগডোব গ্রামের রমিজ উদ্দিন এবং তার ভাই কবির উদ্দিন ১৯৮৮ সালে কিনে ভোগদখল করে আসছেন। আমাদের জমিতে আমার স্বামী টিনশেড একটি দোকান ঘর করে পানের ব্যবসা করে আসছিল। কিন্তু কিছুদিন যাবৎ রমিজ উদ্দিন ও তার ছেলেরা এ জমি ভোগদখলে নানা ভাবে বিঘœ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে একাধিকবার মাপজোখসহ সালিশ মিটিং হয়েছে। পরবর্তীতে বড়াইগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মমিন আলী ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভেয়ারের মাধ্যমে মাপজরিপ করিয়ে যার যার জমি পৃথক করে বুঝিয়ে দেন। তারপরও গত ৪ মার্চ রাত সাড়ে আটটার দিকে রমিজ উদ্দিনের ছেলে আতিক শাহরিয়ার ও আশরাফুল ইসলাম, কবির উদ্দিন, তার ছেলে কাওসার ও সাদ্দাম হোসেন আমার স্বামীর দোকানটি ভাংচুর ও লুটপাট করে। কিছু টিনসহ অন্যান্য সামগ্রী তারা নদীতেও ফেলে দেয়। ঘটনার পরপরই আমি থানা ও ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করলে থানা পুলিশ ও চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি হিসাবে স্থানীয় ইউপি সদস্য ওয়ারসেল আকন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পান। এ ব্যাপারে বর্তমানে মামলা চলমান আছে। এরপর পাকা ঘর করার জন্য আমরা ইট বালি এনে সেখানে রাখি। গত ৬ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে তারা পুনরায় আমাদের ইট বালি লুট করে নেয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসলে তারা পালিয়ে যায়। অথচ পরবর্তীতে তারা আমাদের নামে থানায় অভিযোগ করেছে, আমরা কয়েকজন মহিলা নাকি রমিজ উদ্দিনের ছেলে আতিক শাহরিয়ারের মালিকানাধীন বিকাশ, রকেট ও ভুসিমালের দোকান মেসার্স আতিয়া এন্টারপ্রাইজ ভাংচুর ও লুটপাট করেছি। অথচ বিষয়টি আদৌ সত্য নয়, যার স্বাক্ষী বাগডোব বাহারের শত শত জনগণ।
ইতোঃপূর্বে সালিশ মিটিংয়ের রায়ের মাধ্যমে বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মাসুদ রানা মান্নান বিবাদমান জমির সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকেই দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেন। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে আমরা নাকি ইট-বালি চাপা দিয়ে তাদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছি। মূলত তারা স্থানীয় প্রভাব কাজে লাগিয়ে আমাদেরকে বৈধ সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে, আবার মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে হয়রানী করাসহ অসত্য সংবাদ প্রকাশ করে আমার দলীয় ও ব্যাক্তিগত ইমেজ নষ্ট করার অপচেষ্টা করছে। তাদের এহেন হামলা-মামলা ও হয়রানীর কারণে আমি একজন নারী হিসাবে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। একই সঙ্গে আমাদের দোকানটিও ভেঙ্গে ফেলায় ব্যবসা বন্ধ থাকার কারণে আর্থিক সঙ্কটে ভূগছি।
নেত্রী রত্না খাতুন আক্ষেপ করে বলেন, আমি একজন ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেত্রী হিসাবে সাংবাদিকদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমার জীবনের নিরাপত্তা দাবী করছি এবং আমাদের বৈধ সম্পত্তির অধিকার রক্ষাসহ এ অপশক্তির নির্যাতন ও জুলুম থেকে আমাকে ও আমার পরিবারকে রক্ষার জোর আবেদন জানাচ্ছি।
সচেতন বাগডোববাসীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, নুরজাহান বেগম, মিলন আকন্দ, সোহরাব মোল্লা, সজিব কুমার মাহন্ত সহ অন্যান্য স্থানীয় সুধীজন।