বড়াইগ্রামে সন্ত্রাসী হামলার শিকার এশিয়ান টিভির সাংবাদিক মোতালেব হোসেন।

প্রকাশিত: ২:১৫ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২২

বড়াইগ্রামে সন্ত্রাসী হামলার শিকার এশিয়ান টিভির সাংবাদিক মোতালেব হোসেন

 

 

বিশেষ  প্রতিনিধি।

 

নাটোরের বড়াইগ্রামে অবৈধ ভাবে খননকৃত পুকুরের মাটি ট্রলি দিয়ে নিমার্ণাধীন সড়কে বহন ও চলাচলের পথ নষ্ট হওয়ার ভিডিও ধারন করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন এশিয়ান টিভি ও বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি মোতালেব হোসেন।

 

 

 

একই সঙ্গে তার কাছ থেকে একটি সনি ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়াসহ আহম্মদপুর বাজারে তার বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে হামলাকারীরা। এছাড়া সাংবাদিক মোতালেবকে এলাকা ছাড়াসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে।

 

 

 

রোববার (১২ জুন) দুপুরে উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের কেচুয়াকোড়া গ্রামে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় সাংবাদিক মোতালেব হোসেন জীবনের নিরাপত্তা ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে বড়াইগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

 

 

 

হামলাকারীরা ওই ইউনিয়নের চিহ্নিত সন্ত্রাসী বলে জানা গেছে। তারা বেশ কিছু দিন ধরে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পার্শ্ববতী কামারদহ গ্রামে অবৈধ ভাবে কৃষি জমিতে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রি করে আসছেন। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

 

 

 

অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার কেচুয়াকোড়া গ্রামের মৃত শাজাহান প্রামানিকের ছেলে আব্দুল আওয়াল (৪০), মফিজ উদ্দিনের ছেলে তৌফিক (৩২), কামারদহ গ্রামের আরশেদের ছেলে রাসেল (২৫), বালিয়া গ্রামের মৃত কুদ্দুসের ছেলে নান্টু (৩০), ফজলুর ছেলে রবিউল (৩৩)।

 

 

 

বড়াইগ্রাম থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, কেচুয়াকোড়া গ্রামে একটি সড়ক নিমার্ন কাজ চলছে। এ অবস্থায় অভিযুক্তরা বেআইনী ভাবে পার্শ্ববতর্ী কামারদগ গ্রামে কৃষি জমিতে পুকুর খনন করে মাটি ট্রলি দিয়ে নিমার্ণাধীন সড়ক দিয়ে বহন করে বিভিন্ন নিয়ে যাচ্ছিলো।

 

 

 

এতে করে ওই নিমার্ণাধীন সড়কের ক্ষতি হচ্ছিল। বিষয়টি স্থানীয়দের মুখে শুনে কেচুয়াকোড়া গ্রামের ওই সড়কে যান সাংবাদিক মোতালেব হোসেন। সেখানে ট্রাক্টরে মাটি বহনে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের ছবি ও ভিডিও ধারন করতে গেলে তারা আকষ্মিক ভাবে তার ওপর চড়াও হন এবং মারপিট করে কাছে থাকা ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যান।

 

 

 

এসময় হামলাকারী ১২ ঘন্টার মধ্যে সাংবাদিক মোতালেব হোসেনের পা কেটে ফেলার হুমকি দেন। এছাড়া তাকে এলাকা ছাড়াসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হয়। পাশাপাশি আহম্মদপুর বাজারে তার বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জোরপুর্বক বন্ধ করে দিয়েছে হামলাকারীরা। এই ঘটনায় সাংবাদিক মোতালেব হোসেন ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

 

 

 

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিক মোতালেব হোসেন জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে কেচুয়াকোড়া গ্রামের আব্দুল আওয়াল ও তৌফিক মিলে কামারদহ গ্রামে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন ও মাটির ব্যবসা করে আসছেন। একই সময়ে কেচুয়াকোড়া গ্রামে একটি সড়ক পাকাকরন কাজও চলমান রয়েছে। আর এ অবস্থায় নিমার্ণাধীন ওই সড়ক দিয়ে ট্রলিতে করে মাটি বহনের কারনে সড়কটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ দুপুরে সরজমিনে সেখানে যান। পরে স্থানীয়দের সাক্ষাতকার নেয়া শেষে ছবি ও ভিডি ধারন করতে গেলে আব্দুল আওয়াল ও তৌফিকসহ অন্যরা তার ওপর চড়াও হয় এবং মারপিট করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

 

 

 

তারা এলাকা ছাড়া করাসহ প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। ইতোমধ্যে আহম্মদপুর বাজারে তাদের সার ও কীটনাশকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। তাই বিষয়টির সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী তিনি।

 

 

 

এব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল আওয়াল ও অন্যান্যদের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্র্পকে জানার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাদের পাওয়া যায়নি।

 

 

 

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক জানান, ঘটনাটি শুনেছেন এবং এব্যাপারে একটি রিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

 

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কমার সাহা জানান, ঘটনা শুনেছেন এবং বড়াইগ্রাম থানার ওসিকে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।