ভারতীয় ট্রাক চালকদের বিচরণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে বেনাপোল এলাকাবাসি

প্রকাশিত: ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২১

দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল কাস্টমস্ ও স্থলবন্দর লকডাউনের আওতামুক্ত রেখে আমদানি-রপ্তানী সচল রয়েছে। গত ২৫ এপ্রিল বিকাল হতে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের এক জরুরি বৈঠকে ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত পথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বাণিজ্যের সাথে জড়িত প্রতিবেশী দেশ ভারতে বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার ব্যপক হারে বেড়ে গিয়েছে। আর এই ভারত থেকে প্রতিদিন পাসপোর্টধারী যাত্রী বন্ধ থাকলেও  প্রবেশ করছে শত শত ভারতীয় পণ্যবাহী আমদানি ট্রাক। আর এসব পণ্যবাহী ট্রাকের বেশির ভাগ চালকই মানছে না মরনঘ্যাতি করোনার সুরক্ষা। এতে ব্যপক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে বেনাপোল বন্দরের আশে পাশের বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দারা।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায়, বেনাপোল রপ্তানী টার্মিনাল দিয়ে আমদানী পাথর বোঝায় ট্রাক সরাসরি বেনাপোল বাইপাস সড়ক হয়ে ভারতীয় ট্রাক আমড়াখালী পৌরগেটের সামনে  ডাব্লিও বি-২৩ এফ-০৮১৯, ডাব্লিও বি-২৫ ডি-৬৩৪৭, সারিবদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে আনলোড করবে বলে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক চালদের নেই কোন মাস্ক,পিপি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী। বেনাপোলে প্রবেশ করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন কি জিজ্ঞাসা করলে ট্রাক চালকরা জানান, বাংলাদেশে এসব লাগে না। পাথর বোঝায় গাড়ি নিয়ে বেনাপোল কত দিন এসেছেন তিনি বলেন ৪ দিন যাবত আছেন মাল খালি করে ভারতে ফিরে যাবেন।

স্থানীয়রা বলছেন,সময় মত লাগাম পরানো না গেলে সংক্রমণের সুনামি ঘটতে পারে বার্ডার পাশবর্তী গ্রাম গুলোতে। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে যেসব ট্রাক চালকেরা বন্দরে আসছেন তাদের মধ্যে সচেতনতা খুবই কম। এছাড়া বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করার পর ৪ থেকে ৫ দিন পর্যন্ত থেকে যান বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসময় এসব গাড়ি চালকরা দিদারছে ঘুরে বেড়ান পৌর এলাকা গুলোতে। বেনাপোল রপ্তানী টার্মিনাল দিয়ে আমদানী পাথর বোঝায় ট্রাক বেনাপোল বাইপাস সড়ক দিয়ে আমড়াখালী পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয় আর এর মধ্যে বিভিন্ন পয়েন্টে রাতে ও দিনে ভারতীয় ট্রাকে পাথর নামানো হয়, ভবারবেড়, কাগজপুকুর, দিঘীরপাড়, আমড়খালী সহ প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে এই কর্মযজ্ঞ। আর এই ৫ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩টি বেসরকারী কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রী ছাড়াও বেনাপোল বন্দরে কাজ করতে আসা সরকারি, বে-সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারি সহ বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিষ্টানের সাথে জড়িত শ্রমিক সহ অত্র এলাকার বসবাস কারি গ্রামবাসি করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

বেনাপোল পৌরসভার দিঘীরপাড় ৫ নং ওয়ার্ডের সচেতন নাগরিক আব্দুল হক খোকন জানান, ভারত থেকে সরাসরি পাথর বোঝায় ট্রাক আমদানী কারকরা বেনাপোল হাইরোডের বিভিন্ন পয়েন্টে ও আমড়াখালী পৌরগেটের সামনে আনলোড করেছেন যা আবাসিক এলাকার মধ্যে। এসব এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দারা ব্যাপক করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে অনতিবিলম্বে এসব কার্যক্রম আবাসিক এলাকার মধ্যে বন্ধ করা না হলে কঠিন ক্ষতির সম্মুখে পড়তে হবে পৌর এলাকা বাসির।

বেনাপোল পৌরসভার সেনেটারী ইন্সপেক্টর রাশিদা খাতুন মুঠোফোনে জনান, ভারত হতে পার্সপোর্ট যাত্রী কোয়ারেন্টাইন নিয়ে কিছু দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি বিকালে অত্র এলাকাগুলোতে গিয়ে বিষয়টি দেখবেন।

বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, কভিড ভাইরাস-১৯ প্রতিরোধে ১ম পর্যায়ে সব রকম ব্যবস্থা ছিল। বর্তমান জনবল সংকটে এখন কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে আলোচনা করে বন্দরে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের সব ব্যবস্থা খুব দ্রুত কার্যকর করা হবে।