মণিরামপুরে শত্রুতাবসত মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে ৬/৭ লক্ষ টাকার ক্ষতি…

প্রকাশিত: ২:৪৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২১, ২০২১
স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঘেরে রুই, কাতল, সরপুটি, বিগহেড, বিভিন্ন প্রকারের কার্প জাতীয়, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে থাকেন তারা। কিন্তু সোমবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ন’টার মধ্যে ঘের মালিকদের অনুপস্থিতিতে কে বা কারা ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সারাদিন ঘেরে মাছ মরে ভেসে। এতে ঘের মালিকদের ৬/৭ লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে।
ঘের মালিক তপন কুমার দাস জানান, ‘রাতে ঘেরের পাড়ের ঘরে ছিলাম। রাত ৮টার দিকে ঘের থেকে আধা কিলোমিটার দুরে নিজ বাড়ীতে রাতের খাবার খেতে এসেছিলাম। খাবার খেয়ে সাড়ে ৯টারদিকে ঘেরের পাড়ে এসে টের পেলাম মাছ লাফাচ্ছে। টসলাইট জ্বালিয়ে দেখি প্রচুর মাছ লাফাচ্ছে। বুঝতে পারলাম মাছের কোনো সমস্যা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজনকে বিষয়টি জানালে তারা দেখেশুনে বলে আমার পুকুরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মাছের লাফালাফি বন্ধ হয়ে যায় এবং সব মাছ মারা যায়।
সোমবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাকুড়ী বিলে এ ঘটনা ঘটেছে।  বিষক্রিয়ায় ঘেরে চাষ করা বিপুল পরিমাণ রুই, কাতল, মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ মরে পানির উপরে ভেসে ওঠে। এ ঘটনায় মণিরামপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
সরেজমিন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাকোশপোল গ্রাম সংলগ্ন কাকুড়ী বিলে বাকোশপোল গ্রামের তপন কুমার দাস একই এলাকার হারাধন দেবনাথগং-এর কাছ থেকে ১ এক একর ১৩ শতাংশ জমি নিয়ে এবং সাইদুল হক ও আতিয়ার রহমানের কাছ থেকে ৮৪ শতাংশ জমি বাৎসরিক চুক্তিতে ইজারা নেয় উভয় আলাদা-আলাদা ভাবে দুটি ঘের তৈরী করে মাছ চাষ করে আসছিল।
অপর ঘের মালিক সাইদুল বলেন, আমি তারাবীর নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। ফিরে এসেই বুঝলাম ঘেরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি এনজিও থেকে ঋন নিয়ে এ মাছ চাষ করেছি। এ ঘেরের মাছই ছিল আমার একমাত্র সম্বল। মাছ চাষ করে আমি আমার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতাম। এখন আমি কি করব? কি ভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করব।’
ঘটনা শুনে ওই রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মনিরুজ্জামান মিল্টন।
ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, বিষ প্রয়োগ করে মাছ মারায় তপন ও সাইদুলের প্রায় ৭ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে এই ঘটনার সুস্থ বিচার ও তাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’
মণিরামপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের সানাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।