যশোরের ছেলের হাত ধরে যশোর হাসপাতালে চালু হচ্ছে আইসিইউ ইউনিট; শনিবার উদ্বোধন

প্রকাশিত: ১২:২১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২১

যশোরে এই প্রথম চালু হতে যাচ্ছে ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ)। জেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ৬টি ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী শনিবার (২৪ এপ্রিল) করোনা প্রতিরোধে যশোর জেলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর ইউনিটের কার্যক্রম শুরু করা হবে। এই তথ্য নিশ্চিত করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায়।

ডা. দিলীপ কুমার রায় জানান, ব্যক্তি উদ্যোগে তিনটি মনিটর ও ১০ টি ইনফিউশন পাম্প দেয়ায় আইসিইউ চালু করা সম্ভব হচ্ছে। এখন থেকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আর ঢাকা অথবা খুলনায় ছুটতে হবেনা। এখানে তারা পুরোপুরি চিকিৎসাসেবা পাবেন।
তিনি আরও জানান, প্রথম অবস্থায় ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে ৩টি মনিটর স্থাপন করা হয়েছে। যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, নবনির্বাচিত মেয়র হায়দার গণী খাঁন পলাশ ও পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার ১ টি করে মনিটর দিয়েছেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল আরও ৮টি মনিটর দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ওই ৮টি মনিটর পেলে বাকি শয্যাগুলো চালু করা হবে।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে ওঠার কারণে গত মে মাসে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ১০ শয্যার আইসিইউ ওয়ার্ড করার জন্য ১০ টি ভেন্টিলেটর চেয়ে মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠায় কর্তৃপক্ষ। জুন মাসে মন্ত্রনালয় ৬ টি ভেন্টিলেটর বরাদ্দ পায়। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ৬টি ভেন্টিলেটর হাসপাতালে এসে পৌঁছায়। পরে দক্ষ চিকিৎসক, সেবিকা, ৬টি শয্যা, মনিটর , অক্সিজেন, পাইপ লাইনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি বরাদ্দের ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। নভেম্বর মাসে ৫ টি বেডের বরাদ্দ পাওয়া যায়। অন্যান্য যন্ত্রপাতির অনুমোদন না মেলার কারণে কবে আইসিইউ কার্যক্রম শুরু হবে তা নিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে সিএমএসডি থেকে বেড , অক্সিজেন সিলিন্ডার ও হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা বরাদ্দ পাওয়ায় এই অনিশ্চিয়তা কেটে যায়।

সূত্র হতে আরো জানা যায়, সিএমএসডিতে মেডিকেল অফিসার হিসাবে কর্মরত যশোরের ছেলে ডা. হাসান শাহরিয়ারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আইসিইউ ওয়ার্ডের জন্য এই মালামালগুলো ওই সময় বরাদ্দের অনুমোদন মেলে। সূত্রটি আরও জানায়, এসব মালামাল থাকলেও মনিটর ও ইনফিউশন পাম্পের কারণে আইসিইউ চালু করা সম্ভব হচ্ছিলো না। অথচ জেলায় করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু আইসিইউ না থাকায় গুরুতর রোগীদের অন্যত্র রেফার্ড করা হচ্ছিলো। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতারে আইসিইউ না থাকায় করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিক এম আইয়ূবকে খুলনা ও জামাল হোসেনকে সাতক্ষীরায় রেফার্ড করা হয়। তাদের মতো আরো অনেক রোগীকে অন্যত্র রেফার্ড করা হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল করোনা প্রতিরোধ যশোর জেলা সমন্বয় কমিটির আলোচনা সভায় আইসিইউর বিষয়টি নিয়ে জোরালোভাবে আলোচনা হয়। সভায় ব্যক্তি উদ্যোগে আইসিইউ চালুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।