লকডাউন নয় এখনও চলছে বিধিনিষেধ : ২৮ এপ্রিল পর থেকে চলবে গণপরিবহন

প্রকাশিত: ৫:০৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২১

‘এটা তো লকডাউন নয়। আমরা বিধিনিষেধ দিয়েছি। এই বিধিনিষেধগুলো ২৮ তারিখের পরে শিথিল করা হবে।’ শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমন তথ্য জানান।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত লকডাউন শিথিল হচ্ছে। চলমান বিধিনিষেধের সময়সীমা (২৮ এপ্রিল) পার হওয়ার পর নতুন করে এই কঠোর বিধিনিষেধ থাকছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধীরে ধীরে সবকিছু খুলে দেওয়া হবে। সরকারি-বেসরকারি অফিস সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হবে। চালু হবে গণপরিবহনও।

লকডাউন শিথিল হলে গণপরিবহন চলবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। ২৮ এপ্রিলের মধ্যে তা জানিয়ে দেওয়া হবে এবং এর কোনটা কীভাবে হবে, কতটুকু হবে—তা প্রজ্ঞাপন আকারে আমরা দিয়ে দেবো।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মাস্ক না পরলে তার কাছে কেউ কেনাবেচা করবে না, মাস্কবিহীন কাউকে গণপরিবহনে তোলা হবে না— এভাবে প্রতিটা সেক্টরে কঠোরতার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা মনে করি, এটা আমাদের সামাজিক আন্দোলন। জনসচেতনতা এ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারলে, মনে করি আমরা ভালো থাকতে পারবো।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মাস্ক না পরলে তার কাছে কেউ কেনাবেচা করবে না, মাস্কবিহীন কাউকে গণপরিবহনে তোলা হবে না— এভাবে প্রতিটা সেক্টরে কঠোরতার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা মনে করি, এটা আমাদের সামাজিক আন্দোলন। জনসচেতনতা এ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারলে, মনে করি আমরা ভালো থাকতে পারবো।’

সরকার ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’- এই বিষয়টির ওপরে গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি যাতে আমরা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, সেই বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা চাইবো শতভাগ মানুষ মাস্ক পরবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। আর এটা সম্ভব হলে আমাদের আর কঠোরতার প্রয়োজন পড়বে না।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয় রয়েছে। কাজেই সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে তা আমাদের সকলের জন্যই সুবিধাজনক। আমরা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখলে এবং ঠিকমতো মাস্ক পরলে কঠোর অবস্থায় আসতে হয় না।’

প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ৮ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়। বিধিনিষেধ প্রতিপালনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই বিধিনিষেধের প্রথম ধাপের মেয়াদ বুধবার (২১ এপ্রিল) শেষ হওয়ার আগেই নতুন করে আরও এক সপ্তাহ এর মেয়াদ বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়।

এদিকে বিধিনিষেধের মধ্যেই আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে সীমিত পরিসরে দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সরকারের হাইকমান্ড লকডাউনের বিকল্প মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সবকিছু চালু রাখার পক্ষে। লকডাউনের ব্যাপারে জাতীয় কারিগরি কমিটির ইতিবাচক পরামর্শ থাকলেও দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত রাখতে ও ব্যবসায়ী মহল, দরিদ্র, নিম্ন আয় এবং দিনমজুর মানুষের দুর্বিষহ জীবনের কথা মাথায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লকডাউন শিথিল করার কথা ভাবছেন। পাশাপাশি তিনি শতভাগ মানুষের মুখে মাস্ক পরিধান নিশ্চিতকরণে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। লকডাউনে জনজীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে এবং তা উদ্বেগের ব্যাপার হতে শুরু করেছে মনে করে লকডাউন আর দীর্ঘ করতে রাজি নন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, মানুষ এখন আর লকডাউন চায় না।

সরকারের নীতিনির্ধারক মহল মনে করে, লকডাউন স্বাভাবিক চলাচলে জনগণের মধ্যে এক ধরনের প্যানিকও তৈরি করছে। মানুষের মনের জোর বৃদ্ধি করতে এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণে লকডাউনের বিকল্প ব্যবস্থায় যেতে ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা ভাবতে হচ্ছে সরকারকে।

এদিকে লকডাউন শিথিল হলেও জনগণের চলাচলে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া যাবে না। এসবের অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের আর্থিক দণ্ড দেওয়াসহ কঠিন কিছু বিধিবিধান আরোপ করা হবে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ যত্নশীল থাকার পরামর্শ দেওয়া হবে।