লালপুরের পঙ্গু আমজাদ এখন অসহায়ত্ব জীবনযাপন করছে।

প্রকাশিত: ২:৫৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৯, ২০২১

নাটোর জেলা প্রতিনিধি।
নাটোরের লালপুরের কদিম চিলান ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া চিলান গ্রামের বাদশার ছেলে ভূমিহীন পঙ্গু আমজাদ এখন অসহায়ত্বের জীবন যাপন করছেন। আমজাদের জন্ম থেকে তার এমন অবস্থা ছিলোনা তিনি ছিলেন একজন দিনমজুর ! অন্যের বাড়িতে কাজ করে তাদের জীবন চলতো। মাঠে কাজ করা অবস্থায় পচা শামুকে তার পায়ের আংগুল কেটে যায় । সেখান থেকে আস্তে আস্তে চিকিৎসার অভাবে তার পায়ে সেফটি আলসার খাঁয় হয়ে যায়। চিকিৎসার জন্য গ্রামের লোকের সাহায্য নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাই। ডাক্তার তার পায়ের খাঁয় দেখে আঙ্গুল কেটে ফেলার পরামর্শ দেন, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তার আঙ্গুল কেটে সম্মতি জ্ঞাপন করেন তার বাবা। এরপরে আস্তে আস্তে তার দুই পায়ের অংশ সম্পূর্ণ কেটে ফেলতে হয়। এমনকি তার দুই হাতের আঙ্গুলগুলো কেটে ফেলতে হয় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। বর্তমানে তার চলাফেরা ওঠা-বসা এমনকি ভাত খাওয়া তার জন্য সমস্যা হচ্ছে চামুচ দিয়ে খাদ‍্য খাই প্রেসাব পায়খানা হামাগুড়ি দিয়ে যাইতে হয় । তার বাবা ও মা অসুস্থ, অসুস্থ অবস্থায় তার ছেলেকে দেখার মত কোন শারীরিক ও মানসিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা তাদের নেই। পঙ্গু অবস্থায় আমজাদ এখন জেলেদের মতো ঘরে বসে মাছ মারার জন্য জাল বোনার কাজ বেছে নেন। প্রতি এক মাস অন্তর অন্তর একটি করে মাছ মারা জাল তৈরি করেন আমজাদ। এবং সেটা বাজারে বিক্রি করে তা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। গ্রামে তার একটি ছোট্ট মুদিখানার দোকান ছিল, তাহার নিজের চিকিৎসার জন্য দোকানের ব্যবসায়ী সম্বল টুকু শেষ হয়ে গেছে। সেই দোকানে বসে আমজাদ এখন মাছ মারা জাল তৈরি করেন। তার থাকা-খাওয়া সম্পূর্ণ সেই দোকানে। সরকারি সুবিধা পাওয়ার মধ্যে সে শুধু পঙ্গু ভাতা পায়।
পঙ্গু আমজাদের আকুতি, শুধু পঙ্গু ভাতা পেয়ে আর একটি মাসে একটি করে মাছ মারা জাল তৈরি করে তাহার জীবন চলা দুঃসাধ্য হয়ে দাড়িয়েছে। তার একটি মেয়ে আর কোন ছেলে সন্তান নাই, মেয়েটির বিয়ে দিয়েছে এক দিনমজুরের সাথে। পুঙ্গু আমজাদকে এখন দেখার মত তার অসুস্থ বাবা মা ছাড়া আর কেউ নেই। যদি আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে দোকানে কিছু মালামাল উঠিয়ে কেনাবেচা করত তাহলে তাহার জীবনটা চালিয়ে নিতে পারতো । পঙ্গু আমজাদ হোসেন বলেন, আমি সাহায্য চাই না আমি চাই সরকারি কিছু সহযোগিতা যেন ব্যবসা করে আমি আমার জীবিকা নির্বাহ করতে পারি। সাথে আমার অসুস্থ বাবা-মার চিকিৎসার ভোরন প্রশণ করে কোন রকম জীবন জাপন করতে পারি। কারণ আমার বাবা এবং মা বেশ কয়েকবার ষ্টোক করে মাজা পড়ে গেছে এবং শরীরের কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। আমি পঙ্গু হয়ে বাবা-মার দেখার দায়িত্বভার গ্রহণ করে চলছি অসহায়ত্বের মধ্য দিয়ে। আমার প্রতি সদয় হয়ে সরকার যদি একটু সুদৃষ্টি দিত তাহলে আমি আমার অসুস্থ বাবা মাকে নিয়ে একটু সুখের দিন দেখতে পেতাম এবং বাবা-মার চিকিৎসা করতে পারতাম।