শার্শার আ.লীগের সাঃসঃ নুরুজ্জামান এর জানাযায় হাজারো মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ১১:১১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২২

সাহিদুল ইসলাম শাহীন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

শার্শা উপজেলা গণমানুষের আস্থাভাজন ব্যাক্তিত্ব ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামীলীগের শার্শা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক, সকলের প্রিয়মূখ নুরুজ্জামান পৃথিবী ছেড়ে চিরবিদায় নিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বৎসর। তিনি ২ ছেলে ও ১ মেয়ে সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

নুরুজ্জামান প্রায় দুই বছরকাল শারীরিক অসুস্থতার কারনে রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন,পরে তাকে তার নিজ বাসভবন ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তাকে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্বাবধানে রেখে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম চালনা হয়। চিকিৎসা শুরু থেকেই তিনি তার বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তিনি তার দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে জনবান্ধব এবং কর্মী বান্ধব জনদরদী নেতা ছিলেন। ঢাকার বাড়ীতে যখনি কেউ তাকে দেখতে যেতেন, শুধুমাত্র নির্বাক চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকতেন। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা শারীরিক চিকিৎসা সেবা থেকে নিজেকে বিদায় জানিয়ে রবিবার (২৮ আগষ্ট) ভোর ৫টার দিকে চিরবিদায় নিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তার চলে যাওয়ার এই শূণ্যতা কোন কিছু দিয়ে পূরণ হবার নয়। শার্শার প্রতিটি মানুষ আজ শোকে শোকাহত।

নুরুজ্জামান এর নামাজের জানাযায় উপস্থিত হয়ে ৮৫, যশোর-১ শার্শা আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন এক শোক বার্তায় বলেন, “আপনার চলে যাওয়ার এই শূণ্যতা কোন কিছু দিয়ে পূরণ হবে না। আপনার সাথে হাজার হাজার স্মৃতি। এই স্মৃতি গুলো নীরবে অশ্রুসিক্ত করে তুলছে দুটি চোখ। কথা বলার সময় তিনি নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। কথা বলার সময় আপনার মুখে সবসময় একটি পবিত্র হাসি লেগে থাকতো। নুরুজ্জামান ভাই শুধু আমার সহকর্মী ছিলেন না বরং আমার বড় ভাই ছিলেন। পরিবারের সদস্য ছিলেন। নুরুজ্জামান ভাই দলের যেকোনো বিপদে সবসময় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মাঠে। নেতাকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন সবচেয়ে জনবান্ধব ও কর্মীবান্ধব নেতা। তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার মতো নয়”।
এ ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ এবং তার প্রিয় সংগঠন আ.লীগ এর সকল নেতা-কর্মী ও সামাজিক সংগঠন গুলো তাদের ফেইসবুকের শোক বার্তায় মণের অনুভুতি’র কথা প্রকাশ করে চলেছেন। তারা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছেন।

নুরুজ্জামান এর প্রথম নামাজের জানাযা অনুষ্ঠিত হয় রাজধানী ঢাকায়, এরপর লাশবাহী শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত করে লাশ বেনাপোলের নামাজগ্রামস্থ বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিকালে আসরের নামাজ শেষে মরহুমের দ্বিতীয় নামাজের জানাযা অনুষ্ঠিত হয় বেনাপোল বলফিল্ড ময়দানে। হাজার হাজার মানুষ প্রিয় এই মানুষটির জানাযায় অংশ নেন। শার্শা ও বেনাপোল মানুষের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী উপজেলা এবং যশোর জেলা শহর থেকে ছুটে আসেন যশোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান-সাইফুল ইসলাম মুকুল, যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান হায়দার গনি খান পলাশ সহ আ.লীগের বিভিন্ন অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। মরহুম নুরুজ্জামান এর লাশ দাফনের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয় তার জন্মস্থান অত্র উপজেলার পুটখালী ইউনিয়নাধীন বারোপোতা গ্রামে। সেখানে তার তৃতীয় নামাজের যানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

মরহুম নুরুজ্জামানের সংক্ষিপ্ত জীবণীঃ-
পিতার নাম:-মোঃ আব্দুস সাত্তার(১৯৭১ সালে মহান মুক্তিুদ্ধে সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা:-১৯৭৮ ইং সনে এসএসসি,১৯৮০ সনে এইচএসসি এবং ১৯৮১ ইং সনে ডিগ্রীতে অধ্যায়নরত ছিলেন।
ব্যবসায়িক পরিচয়:-পড়াশোনা শেষে ১৯৮৪ সালে “মেসার্স পদ্মা ট্রেডিং কর্পোরেশন” ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং অদ্যাবদি সুনামের সহিত ” কাষ্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
রাজনৈতিক:- ২০০১ ইং সনের জাতীয় নির্বাচনে দলের পক্ষে সক্রিয় কর্মী হিসেবে ৮৫,যশোর-১ শার্শা আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন এর একান্ত আস্থাভাজন সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন।
বেনাপোল কাষ্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস এসোসিয়েশন নির্বাচনে বিভিন্ন মেয়াদে তার কার্যকাল:- সদস্য(১৯৮৬-৮৮),অর্থ সম্পাদক(১৯৮৮-৯০),যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক(১৯৯২-৯৪),যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক(১৯৯৬-৯৯),সাধারণ সম্পাদক(২০০০-২০০৯),সিনিয়র সহ সভাপতি(২০১১—-)।
বেনাপোল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটি’র সভাপতির দায়িত্ব পালণ করে আসছিলেন। দায়িত্বরত থাকা কালীন তিনি সকল কার্যক্রম অত্যন্ত সফল ভাবে পরিচালনা করেছেন।