শার্শায় নিজামপুরে ফিল্মী কায়দায় যুবককে হত্যার চেষ্টা

প্রকাশিত: ৯:৫৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩


জাহিদ হাসানঃ

যশোরের শার্শা উপজেলার ১১ নং নিজামপুর ইউনিয়নের শ্রীকোনা গ্রামে আলামিন হোসেন বিশে (৩০) কে চায়ের সাথে বিসাক্ত ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যা মিশনে নামে একই গ্রামের নাসির হোসেন।
শনিবার (১৪ জানুয়ারী) গ্রাম্য শালিশ থেকে জানা যায়, শ্রীকোনা গ্রামে আলামিন হোসেন বিশে একজন দিনমজুর শ্রমিক তাকে হত্যার জন্য একই গ্রামের মোঃ নাসির (৩৫) চায়ের সাথে বিষ মিশিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। এজন্য আলামিন যে চায়ের দোকানে আড্ডা দিত সে দোকানদারকে ম্যানেজ করে হত্যার পরিকল্পনা করে নাসির। নিজামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের লতিফের চায়ের দোকানে ফিল্মী কায়দায় বিসাক্ত ট্যাবলেট চায়ের সাথে মিশিয়ে খাইয়ে মেরে ফেলার জন্য একই গ্রামে চায়ের দোকানদারকে ১০০০ টাকা দেই নাসির। হত্যা পরিকল্পনাকারী নাসির, পিতাঃ এহান আলী, গ্রামঃ শীকোনা। চায়ের দোকানদার লতিফ জানান, গত এক মাস আগে নাসির আমার চায়ের দোকানে এসে আমাকে বলে আলামিনকে একটা ঔষধ খাওয়াতে হবে তার জন্য আমাকে দুই হাজার টাকা দিতে চাই। আমি নাসিরের কথা শুনে খাওয়াতে রাজি হই কারন আলামিন আমার ভাগ্নে সেটা নাসির জানতো না এজন্য আমি হত্যার পেছনে কে বা কারা লুকিয়ে আছে সেটা জানার জন্য নাসিরের কথায় রাজি হয়। এর ঠিক পনের দিন পর নাসির আমাকে বোতলে একটি ঔষধ দেই। আমি সেটি নিয়ে মাটিতে পুতে রাখি। এদিকে নাসিরকে আমি বলি কে কি কারনে আলামিনকে এই ঔষধ খাওয়াবে সেটা আমাকে বলতে হবে। নাম না বললে আমি বিষয়টি ইকবাল মেম্বারকে জানাব। পরে নাসির নাম না বললে আমি ঘটনাটি ইকবাল মেম্বারকে জানাই এবং ইকবাল মেম্বারের নিকট বিষাক্ত ঔষধটি দিয়ে দেই।
বিচারের সময় হত্যা পরিকল্পনাকারী নাসির জানায়, আমি ঔষধটি চায়ের দোকানদার লতিফকে দিয়েছি। তবে আমাকে এই ট্যাবলেটটি দিয়েছেন ডিহি ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর ছেলে ইউসুফ আলী আর এঘটনাটি গত দেড় বছর আগের। আমার সাথে চায়ের দোকানদার লতিফের কথা কাটা কাটির কারনে লতিফ এখন আমাকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে। বিচার থেকে আরও জানা যায়, আলামিনের শশুর বাড়ির পাশে ইউসুফ আলীর সাথে আলামিনের বৌয়ের বিয়ের কথা ছিলো। সে জন্য ইউসুফ কৌশলে নাসিরকে দিয়ে এই কাজ করাতে পারে।
এ বিষয়ে ৯ নং ওয়ার্ড শ্রীকোনা গ্রামের মেম্বার ইকবাল জানান, নাসির ও আলামিনের বিষয়টি নিয়ে আমরা গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বসেছিলাম কিন্তু সময় সল্পতার কারনে সালিশটি শেষ করতে পরিনি। তবে খুব তাড়াতাড়ি বিষয়টি নিয়ে আবার বসবো।
এ ঘটনার বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রীকোনা গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি জানায়, নাসির এবং তার পিতা এহান আলী খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক এর টাকার জন্য যে কোন কাজ করতে পিছপা হয়না। এরা এই বিচারটা বানচাল করার জন্য সাইদুর মেম্বারকে টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আরও জানা যায় আলামিনকে হত্যার জন্য নাসির ইউসুফের নিকট থেকে দফায় দফায় কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া নাসিরের কসমেটিকের দোকান থাকায়, সে গ্রামের বিভিন্ন নারীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং কবিরাজির নামে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।

এ বিষয়টির সত্যতা জানার জন্য ডিহি ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামে ইউসুফ আলীর বাড়িতে গেলে তাকে বাড়িতে না পেয়ে এবং তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।