শ্যামনগরে আদিবাসী মুণ্ডা পল্লীতে হামলায় আহত নরেন্দ্র মুণ্ডার মৃত্যু”গ্রেফতার-২

প্রকাশিত: ৬:০৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২২

এম কামরুজ্জামান, শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

সাতক্ষীরা’র শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট অন্তিখালী গ্রামের আদিবাসী মুণ্ডা পল্লীতে বরোরচিত হামলায় আহত নরেন্দ্রনাথ মুণ্ডার মৃত্যু হয়েছে।শনিবার ২০ আগস্ট দুপুর ৩টার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।এদিকে হামলার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে শ্যামনগর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন, উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের শ্রীফলকাটী গ্রামের মোঃ আলমগীর গাজীর ছেলে নুর হোসেন ও নুর মোহাম্মদ।
উল্লেখ্য, উপজেলার ধুমঘাট অন্তাখালী গ্রামের মুন্ডা পল্লীর আদিবাসী মুন্ডাদের উপর নারকীয় তাণ্ডব চালানোর ঘটনা ঘটে। শুক্রবার ১৯ আগস্ট বেলা সাড়ে ৮ টার দিকে রাশিদুল ইসলাম ও এবাদুল হোসেনের নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক লাঠিয়াল এ তান্ডব চালায়। বিরোধপূর্ণ ৮ বিঘা জমি দখলে নিতে পুর্বপরিকল্পিত এ তান্ডব চালানোর জন্য বংশীপুর, ঈশ্বরীপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন অংশ হতে লাঠিয়ালদের ভাড়া করে আনা হয়। এসময় হামলার সাথে জড়িতরা আদিবাসী মুন্ডাদের পরিবারের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রেখে তাদের ভোগ দখলে থাকা জমি চাষ করে সীমানা পিলার স্থাপন করে। এক পর্যায়ে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে পালিয়ে গিয়ে জমি দখলে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে মুন্ডা সম্প্রদায়ের লোকজনের বেপরোয়াভাবে লাঠিপেটা করে হামলার সাথে জড়িতরা। এতে আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের বিলাসী মুন্ডা, রিনা মুন্ডা, সুলতা মুন্ডা ও নরেন্দ্র মুন্ডাকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।এদিকে সন্ত্রাসী হামলার সময় অবরুদ্ধ মুন্ডা পরিবারগুলো ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে সাহায্য চাইলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করে।
হামলার শিকার ফনিন্দ্রনাথ মুন্ডা জানান তাদের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমি দখলের জন্য প্রায় দুই থেকে আড়াই শতাধিক লাঠিয়াল শুক্রবার হামলা চালায়। এসময় তাদের প্রতিটি পরিবারকে বসত ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রেখে সন্ত্রাসীরা বসতবাড়ি সংলগ্ন চাষের জমিতে কলের লাঙল দিয়ে চাষ শুরু করে। এসময় জমিতে রোপনের জন্য তৈরি বীজতলা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয় হামলার সাথে জড়িতরা।
তিনি আরও বলেন কৌশলে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে পালিয়ে কয়েকজন সেখানে যেয়ে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে লাঠিয়াল বাহিনী তাদের বেপরোয়াভাবে মারপিট করে। এসময় তার স্ত্রীসহ অন্তত ১২ জন আহত হলে মারাত্বক আহত ৪ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন গত কয়েক বছর ধরে প্রভাবশালী আবদুল গফুর সরদারের ছেলে রাশিদুল ও এবাদুল ঐ জমির মালিকানা দাবি করে তা দখলের হুমকি দিয়ে আসছে। বিষয়টা আদালত বিচারাধীন থাকার পরও শুক্রবার শত শত লাঠিয়াল নিয়ে তা দখল করে নিয়েছে।
সুন্দরবন আদিবাসী মুন্ডা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণপদ মুন্ডা বলেন শুক্রবার সকালে আদিবাসী মুন্ডাদের উপর নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী। সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে মুন্ডা সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন ও ভোগদখলে থাকা জমি দখল করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন।