শ্যামনগরে আধানিবিড় পদ্ধতিতে বাগদা চাষে সফলতা

প্রকাশিত: ৬:১০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০২২

এম কামরুজ্জামান, শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলায় লবন পানির চিংড়ী চাষ হয়ে আসছে। এ অবস্থার মধ্যে উপজেলা মৎস্য অফিসের সহায়তায় জলবায়ু সহনশীল বাগদা সেমি-ইনটেনসিভ দলগত চাষে সফলতা পাওয়া গেছে। এসব কথা গুলি বলছিলেন উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউপির পাশের্খালী বাগদা আহরণ অনুষ্ঠানে চিংড়ী চাষিরা। বাগদা সেমি-ইনটেনসিভ গ্রুপ সভাপতি সাজিদা বেগম, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিষ্টার, সদস্য ইন্দ্রানী ব্যাপারী বলেন মৎস্য অধিদপ্তর , জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহায়তায় সেমি-ইনটেনসিভ পদ্ধতিতে বাগদা চাষ করে প্রায় চার মাসে তিন বিঘা জমিতে বাগদা আহরণ হয়েছে ছয় শত পঞ্চাশ কেজি। প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে খরচ দিয়ে মোট তিন লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। মাছ বিক্রীর পর পাওয়া যায় প্রায় চার লক্ষ টাকা। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পে চলতি বছরের জুলাই থেকে মাছের পোনা ছাড়া হয় এবং অক্টোবর মাসের আঠাশ তারিখে বাগদা আহরণ করা হয়।গ্রুপ সভাপতি সাজিদা বেগম বলেন তাদের গ্রুপে সদস্য সংখ্যা পঁচিশ জন।এর মধ্যে নারী বার জন ও পুরুষ তের জন। সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে সবকিছু করেন। সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে এই প্রকল্প এবং সেমি-ইনটেনসিভ পদ্ধতিতে বাগদা চাষ সম্পর্কে সকলকে কয়েকবার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পে চাষিরা বেশ লাভবান হবেন বলে জানান এবং এই প্রকল্পের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে পাশ^বর্তী আরও একটি বাগদা সেমি-ইনটেনসিভ দলভিত্তিক চাষ কার্যক্রম করবেন বলে জানান।
দেখা যায় বাগদা সেমি-ইনটেনসিভ প্রকল্পে সনাতনী পদ্ধতি থেকে ভিন্ন পদ্ধতিতে চাষ । নিয়ম মেনে ট্রেতে মাছের খাদ্য প্রদান, মাঝে মাঝে মাটি ও পানি পরীক্ষা, পানিতে অক্সিজেন সরবরাহ করা, প্রকল্পে প্রবেশ করা ও ঘেরের পানিতে নামার পূর্বে পটাসিয়াম ব্যবহার করা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সহ অন্যান্য নিয়মাবলী মেনে চলা হয়।
শুক্রবার ২৮ অক্টোবর প্রকল্পের বাগদা আহরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পুলকেশ মন্ডল। তিনি প্রকল্পের কার্যক্রম দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং আগামীতে এই এলাকায় অন্যান্য প্রকল্প গ্রহণের ব্যাপারে চেষ্টা করবেন বলে মৎস্য চাষিদের জানান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাজ কুমার বিশ্বাস, প্রকল্প পরিচালক সমীর কুমার সরকার, এফএও প্রতিনিধি ড.মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ মাসুদুর রহমান, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্যামনগর তুষার মজুমদার, ফিল্ড ফ্যাসিলেটিটর মেহেদী হাসান,মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধা প্রকল্পের চাষিবৃন্দ প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, সুন্দরবন সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জ ইউপির পাশের্খালী গ্রামে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহায়তায় কমিউনিটি বেইজড কাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফিশারিজ এন্ড অ্যাকোয়াকালচার ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ প্রকল্পটি মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়।