সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের ‘টাকার পাহাড়’ News Publisher News Publisher প্রকাশিত: ১২:৪৯ অপরাহ্ণ, জুন ২৬, ২০২০ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে (সুইস ব্যাংক) কোনো কোনো বাংলাদেশি যেন ‘টাকার পাহাড়’ গড়ে তুলেছেন। ২০১৯ সালে বাংলাদেশিদের মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৩০ লাখ ফ্র্যাংক। স্থানীয় মুদ্রায় ৫ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা (প্রতি সুইস ফ্র্যাংক ৯০ টাকা হিসাবে), যা কমপক্ষে ১২টি বেসরকারি ব্যাংকের (দেশের) পরিশোধিত মূলধনের সমান। ২০১৮ সালে এ সঞ্চয় ছিল ৫ হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ১৩২ কোটি টাকা কমেছে। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। তবে আলোচ্য বছরে দেশটির আমানত কমেছে। বৃহস্পতিবার সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কোনো বাংলাদেশি যদি তার নাগরিকত্ব গোপন রেখে টাকা জমা করে থাকে, তার তথ্য এই প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগ না হওয়ায় পুঁজি পাচার হচ্ছে। আমানত রাখার ক্ষেত্রে এ বছরও বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। তবে আলোচ্য সময়ে সুইস ব্যাংকে সারা বিশ্বের আমানত বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, এই আমানতের বিভিন্ন ক্যাটাগরি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি অংশ হল ব্যক্তিগত আমানত। তবে তাও আস্তে আস্তে কমছে। তবে পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বিভিন্ন চেষ্টা চলছে। এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার। তবে যেহেতু আমরা এগমন্ট গ্রুপের সদস্য, তাই সেখান থেকে তথ্য পাওয়া যায়। সেভাবেই বিভিন্ন চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশিদের আমানত : ২০১৯ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানতের স্থিতি ছিল ৬০ কোটি ৩০ লাখ ফ্র্যাংক। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে যা ছিল ৬১ কোটি ৭৭ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১৭ সালে ছিল ৪৮ কোটি ১৩ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১৬ সালে ৬৬ কোটি ১৯ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১৫ সালে ৫৫ কোটি ৮ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১৪ সালে যা ছিল ৫০ কোটি ৬০ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১৩ সালে ৩৭ কোটি ২০ লাখ ফ্র্যাংক স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। ২০১২ সালে ছিল ২২ কোটি ৯০ লাখ ফ্র্যাংক। ২০১১ সালে ছিল ১৫ কোটি ২০ লাখ ফ্র্যাংক। উল্লেখ্য, স্বর্ণালংকার, শিল্পকর্ম এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র সুইস ব্যাংকে জমা রাখা হলে সেগুলো আর্থিক মূল্য হিসাব করে আমানতে যোগ করা হয় না। মোট আমানত : প্রতিবেদন অনুসারে আলোচ্য সময়ে বিশ্বের সব কটি দেশের আমানত বেড়েছে। আলোচ্য বছরে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে আমানতের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে যা ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। এ হিসাবে এক বছরে আমানত বেড়েছে ৩ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। ২০১৭ সালে ছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। এ ছাড়া ২০১৬ সালে ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। ২০১৫ সালে সুইস ব্যাংকে বিদেশিদের মোট আমানত ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। ২০১৪ সালে ১ লাখ ৩৮ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। ২০১৩ সালে ছিল ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি, ২০১২ সালে ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি ফ্র্যাংক। সুইস ব্যাংকে আমানত রাখার দিক থেকে এ বছর প্রথম অবস্থানে যুক্তরাজ্য। ২০১৯ সালে দেশটির আমানতের পরিমাণ ৩৭ হাজার ৬৬০ কোটি ফ্র্যাংক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৫ হাজার ৯০৮ কোটি, সিঙ্গাপুর ৩ হাজার ৭৩০ কোটি, চীন ১ হাজার ৫০৫ কোটি, রাশিয়া ১ হাজার ৩৮৬ কোটি, সৌদি আরব ৯৭৮ কোটি, থাইল্যান্ড ৪৫০ কোটি, তাইওয়ান ১ হাজার ২২ কোটি, জাপান ২ হাজার ৭২১ কোটি, তুরস্ক ৬৬৯ কোটি, ভিয়েতনাম ৭৫ কোটি, কম্বোডিয়া ২ কোটি এবং মালয়েশিয়া ২৩১ কোটি ফ্র্যাংক। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের আমানত সবচেয়ে বেশি কমেছে। গত বছর দেশটির আমানত ছিল ৭২ কোটি ফ্র্যাংক। এবার তা কমে ৩৫ কোটিতে নেমে এসেছে। অর্থাৎ সুইস ব্যাংকে আমানতের দিক থেকে এবার পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। ভারত আগের বছরের চেয়ে ৪ কোটি ফ্র্যাংক কমে ৮৯ কোটি ২০ লাখে নেমে এসেছে। এ ছাড়া নেপাল ১৭ কোটি, আফগানিস্তান ৪ কোটি ৫২ লাখ, ভুটান ১৩ লাখ, শ্রীলংকা ৪ কোটি এবং মিয়ানমারের ৪৭ লাখ ফ্র্যাংক আমানত রয়েছে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, ২০০৬-২০১৫ সাল পর্যন্ত দশ বছরে বাংলাদেশ থেকে সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের প্রায় সমান। একক বছর হিসাবে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ১৫১ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। দেশীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে ৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব। জিএফআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪টি প্রক্রিয়ায় এই অর্থ পাচার হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশি পণ্যের আমদানিমূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং), রফতানিমূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং), হুন SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: