সুন্দরবনে মধু পারমিটের পূর্বে চোরাই ভাবে মধু কেটে সাবাড়, কর্তৃপক্ষ নিরব

প্রকাশিত: ৯:৫৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০২৩


এম কামরুজ্জামান, শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে প্রতি বছরের ন্যায় আগামী ১ এপ্রিল সুন্দরবনের মধু আরনের আনুষ্ঠানিক ভাবে পাশ দেওয়া হবে। অথচ বুড়িগোয়ালিনী ষ্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম একটি দালাল চক্রের সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা চুক্তিতে সুন্দরবনে চোরাই ভাবে মধু আহরণ অব্যাহত রেখেছে। যার কারণে চোরাই মধু আহরণের বিষয়ে বন বিভাগের পক্ষ থেকে নেই কোন অভিযান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপকুলীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানেন, সাতক্ষীরা সহকারী বন সংরক্ষক নূতন আসায় সব কিছু এখনও বুঝে উঠতে পারেননি। বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম একটি দালাল চক্র তৈরি করে সুন্দরবন উজাড়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রেকর্ড সৃষ্টি করে চলেছে। ওই দালালদের মাধ্যমে চোরাই মধু আহরণকারীরা পাশ ছাড়ার পূর্বে সুন্দরবন থেকে মধু আহরণ অব্যহত রেখেছে। ওই দালাল চক্রের মাধ্যমে সুন্দরবনের চলছে বাঘ হরিণ নিধন মূল্যবান কাঠ পাচার ও নিষিদ্ধ এলাকায় মাছ কাঁকড়া আহরণ। এ সমস্ত ঘটনায় স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও কর্তৃপক্ষ রয়েছে নিরব ভূমিকায়। এলাকাবাসী বলছে, নুরুল আলমের খুঁটি জোর কত দূর। তার সহযোগিতা পেয়ে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে শিকারীরা। সম্প্রতি বন বিভাগ ও সিপিজির সদস্য সহ র‍্যাব ও কোটগার্ডের সদস্যদের হাতে হরিণ ও বাঘের চামড়া আটক হয়েছে। পশ্চিম সুন্দরবনের কয়েকটি এলাকায় একাধিক চোরাই শিকারি চক্র সুন্দরবন থেকে হরিণ শিকার করে। এদের একদল সুন্দরবনে, আরেক দল লোকালয়ে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী বন বিভাগের কাছে হরিণ শিকারিদের ১০৮ জনের একটা তালিকাও রয়েছে। এর মধ্যে বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনে ৪২ জন,কোবাদক স্টেশনে ৩০ জন,কদমতলা স্টেশনে,২০ জন ও কৈখালী স্টেশনে ১৬ জন। তালিকা ছাড়াও আরো অনেকে জড়িত রয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপকূলীয় এলাকায় অনেকে জানিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে বন বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের ম্যানেজ করে, আবার কখনো তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণ শিকার করে আসছে। বন বিভাগের তথ্য মতে সাতক্ষীরা রেঞ্জে২০২৩সালে বাঘ গননার জন্য ৩ শত ৭৬টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয় জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহের দিকে। এর মধ্যে ৮টি ক্যামেরা চুরি করে চোরারা। বিষয়টি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বন বিভাগের নজরে আসে। ১২ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম কে এম ইকবাল হোসেন চৌধুরী সুন্দরবনের অভিযান শুরু করে ৫টি নৌকা ও ১৪ জেলেকে নিষিদ্ধ এলাকা থেকে আটক করে ১৪ ফেব্রুয়ারি,বন মামলা প্রদান পূর্বক তাদেরকে জেল হাজতে পাঠান। অভিযোগ রয়েছে আটককৃতদের নৌকা থেকে জব্দকৃত মাছ কাঁকড়ার সামান্য কিছু জব্দ দেখাইয়ে বেশিরভাগ বিক্রি করে দেওয়া সহ লুটপাট করে নেওয়া হয়। একই দিনে জেলেদের সংবাদের ভিত্তিতে সুন্দরবনের মুরালি খাল থেকে বন বিভাগ মৃত বাঘের কঙ্কাল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শ্যামনগর থানায় জিডি হয়েছে বলে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম বাদল স্বীকার করেছেন। এলাকাবাসীর মতে চোরাই শিকারীরা বাঘ মেরে চামড়া ছাড়িয়ে ফেলে গেছে। বুড়িগোয়ালিনী সহকারি স্টেশন কর্মকর্তা হরিণের মাংস আটক করার খবর রয়েছে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সহকারী বন সংরক্ষক মহোদয়ের সাথে মুঠো ফোন বার বার ফোন দিয়ে রিসিব না হওয়ায় মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি। বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলমের সাথে কথা হলে,তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন। সুন্দরবন রক্ষায় শ্যামনগরের সুধীজন বন বিভাগ সহ আইন প্রয়োগ কারী সংস্থাকে আরো তৎপর হওয়া ও তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি করেছে।
পাশ ছাড়ার পূর্বে চোরাই ভাবে আহরণকৃত মধু ।