সেল্ফ ইনজুরি ডিসঅর্ডার বা নিজেই নিজেকে আঘাত করা!

প্রকাশিত: ৩:১৪ পূর্বাহ্ণ, জুন ১০, ২০২০

সেল্ফ ইনজুরি ডিসঅর্ডার যা একটি মারাত্মক মানসিক রোগ বলে বিবেচিত হয়। বিভিন্ন ধরনের সাইকোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার এর নাম আপনারা শুনে থাকবেন। তন্মধ্যে সেল্ফ ইনজুরি ডিসঅর্ডার একটি সাইকোলজিকাল সমস্যা যেখানে এই রোগের রোগী নিজেই নিজেকে আঘাত এর মাধ্যমে ক্ষতি সাধন করে । 

কয়েকদিন আগের  একটি খবর (যা জাতীয় দৈনিক সহ অনলাইন পোর্টালগুলোতে ছাপা হয়েছিল) অনেকের চোখে পড়ে থাকতে পারে যে সাতক্ষীরায় এক ব্যক্তি তার হারানো ছাগলের খোঁজ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে রাগে তার নিজের চোখ নিজেই উপড়ে ফেলেছে।
ব্যাপারটাতে লোকজন হাস্যকর কিছু খুজে পেলেও সেটা যথেষ্ট সিরিয়াস বিষয় যেটার নাম মেন্টাল ডিস-অর্ডার, নাম Self Injury Disorder.

তো আসুন এই ভয়ংকর মানসিক রোগ সম্পর্কে কিছু  জেনে নিই:

সেল্ফ ইনজুরি ডিসঅর্ডার(self injury disorder)     কি?

যে মানসিক সমস্যার কারনে কোন ব্যক্তি যখন নিজেই তার দেহের কোন অংশের ক্ষতি সাধন করে (আত্মহত্যা নয়) তখন তাকে Non suicidal self injury বা self-harm বা self mutilation বলে।

গবেষণা বলছে কোন ব্যক্তি এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে পারে :

১.যাদের শারীরিক,মানসিক বা যৌন হয়রানির ইতিহাস রয়েছে।
২.যারা এমন পরিবারে বড় হয়েছে যেখানে রাগ বা উষ্মা প্রকাশে বাধা দেয়া হয়।
৩.যাদের আবেগ প্রকাশ করার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম অথবা যাদের সোশ্যাল সাপোর্ট নেটওয়ার্ক কম রয়েছে।
৪.obosessive Compulsive disorder অথবা eating disorder এর মত সমস্যা যাদের আছে তারা।
৫.কৈশোরে পা রাখা মেয়েরা।

এটি কয়েক ধাপে প্রকাশ পেতে পারে ;

ব্যক্তিটি কয়েকটি উপায়ে নিজের দেহের ক্ষতিসাধন করতে পারেন।যেমন:
-দেহের কোনও অংশ বারবার কাটা বা পুড়িয়ে ফেলা
-নিজেকে ঘুষি মারা বা আঁচড়ানো
-দেহে সুচ ঢুকানো
-দেয়ালে মাথা ঠুকা
-চোখ চেপে ধরা
-আঙ্গুল বা হাত কামড়ে ধরা
-চুল টেনে তুলে ফেলা বা চেষ্টা করা
-স্কিন বা চামড়া তুলে ফেলা অথবা ক্ষতি করা

এইসব রোগীর কিছু সাধারণ লক্ষ্মণ প্রকাশ পায় 

  
এই ডিস-অর্ডারের লক্ষণ ঐ ব্যক্তির মানসিক অবস্থা বা পরিবেশের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।যেমন:

-তীব্র গরমেও ফুল হাতা জামা ও প্যান্ট পড়ে থাকা

– লাইটার,রেজর বা ধারালো কোনও বস্তু সঙ্গে রাখা যা তার সাথে থাকার কথা নয়

-কম আত্মসম্মানবোধ

-আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা

-স্কুল,কলেজে খারাপ পারফরম্যান্স ইত্যাদি।

কাছের কোনও ব্যক্তির মধ্যে এমন অস্বাভাবিক আচরণ প্রকাশ পেলে মানসিক চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে বলুন।

এদের মুল রোগটা নিজেকে যন্ত্রণা দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে সবসময়ই। অন্যান্য ব্যক্তিদের ক্ষতি সাধন করা কখোনই এদের লক্ষ্য থাকে না । আসুন সকলে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট রোধ করি এবং  বয়সন্ধি কালে কিশোর- কিশোরীদের যত্ন এবং তাদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখি ।  এইভাবে এই ডিসঅর্ডার প্রতিরোধ করা সম্ভব।