হাতিতে চড়ে বিয়ের মানত পূরণ হল না

প্রকাশিত: ৪:১৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩০, ২০২৩

মোঃ আহসান হাবিব শিমুল (আদমদীঘি, বগুড়া)

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার পশ্চিম সিংড়া গ্রামের বাসিন্দা স্টুডিও ব্যবসায়ী তবিবর রহমান মানত করেছিলেন তার একমাত্র ছেলে বেঁচে থাকলে হাতিতে চড়িয়ে বিয়ে করাবেন। সেই মানত পূরণ করতে হাতিও ভাড়া করেছিলেন। কিন্তু বিধি বাম। ভাড়ায় আসা হাতি দিয়ে হাতির মাহুত সড়কে চাঁদাবাজী করতে গিয়ে ঘটে দুর্ঘটনা। কাভার্ডভ্যান- মটরসাইকেলের মুখোমুখী সংঘর্ষে নিহত হয় মটরসাইকেল আরোহী মাদ্রাসা শিক্ষক ও তার বাবা। মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনার পর এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা সড়কে চাঁদাবাজী করার অভিযোগে হাতি ও তার মাহুতকে আটক করে গণপিটুনি দিতে শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতি ও মাহুতকে থানা হেফাজতে নেয়। এতে করে আরেক দুর্ঘটনা (গণ পিটুনিতে মৃত্যু) থেকে রক্ষা পায় হাতি ও মাহুত। এমন অবস্থায় পন্ড হয়ে যায় হাতির পিঠে চড়িয়ে বিয়ে করানোর মানত।

ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বগুড়ার আদমদীঘিতে। রবিবার সকালে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তবিবর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন আমরা পারিবারিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, হাতি ভাড়ার সম-পরিমাণ টাকা গ্রামের মসজিদে দান করা হবে। কিন্তু কত টাকায় হাতি ভাড়া করেছিলেন, তার ছেলের নাম কি এবং এমন রাজকীয় মানত করার কারন কী সেটা জানাতে অস্বিকার করেন। তিনি বলেন, বৌ-ভাতের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত আছি, এবিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে তারাতারি কথা শেষ করতে তাড়াহুড়া করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বলেন বগুড়ার মহাস্থান থেকে হাতি ভাড়া করি। হাতি নিয়ে এসে মাহুত ভাড়া বাবদ অগ্রিম টাকা দাবী করে, কিন্তু দেইনি। শনিবার সকালে সান্তাহার বাজার থেকে বিয়ের অবশিষ্ট সদাইপাতি করে ফিরে এসে দেখি হাতি ও তার মাহুত নেই। পরে শুনি যে, ইন্দইল ব্রিজের কাছে সড়কে চাঁদাবাজী করতে গিয়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

এদিকে, শনিবার সকালে কাভার্ডভ্যান- মটরসাইকেলের মুখোমুখী সংঘর্ষে নিহত মটরসাইকেল আরোহী আদমদীঘি আদমিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারি মাওলানা জাহিদুর রহমান ও তার বাবা লোকমান হোসেনের মরদেহ উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউপির লক্ষীকুল গ্রামে পৌঁছলে শোকার্ত গ্রামবাসীর ঢল নামে। এদিন বাদ আসর বাবা-ছেলের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খান রাজু, ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হক আবুসহ হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষ জানাজায় অংশ গ্রহণ করেন। যোগাযোগ করা হলে আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্য রেজাউল করিম রেজা বলেন, দুর্ঘটনার পর তদন্তে পাওয়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজী করার জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে এমন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এ কারনে সন্ধ্যা রাতে হাতির মালিক আসার পর তাঁর মুচলেকা নিয়ে থানা হেফাজত থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।