১২১ আইসিইউ শয্যার ৮৬ খালি! তবু ফেরত যাচ্ছে করোনা রোগী

প্রকাশিত: ১২:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২০

লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারি ও ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান চালিয়েও চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিত্সা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। করোনা রোগীরা হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরে চিকিত্সা পাচ্ছে না। নানা অজুহাত দেখিয়ে তারা রোগীদের ফেরত দিচ্ছে।

চট্টগ্রামে প্রশাসনের তালিকা করা ২০টি বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৫৮৮টি শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে অর্ধেক শয্যাই খালি। ১২১টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ৮৬টি শয্যাই খালি রয়েছে।

চট্টগ্রামে করোনা রোগী প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল শনিবারও নতুন করে ২২২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের একটি অংশের আইসিইউ সেবা জরুরি হয়ে পড়ছে। কিন্তু চট্টগ্রামে আইসিইউ সেবার অপ্রতুলতার কারণে জটিল রোগী মারা যাচ্ছে। এ কারণে যাদের সামর্থ্য আছে তারা উন্নত চিকিত্সার জন্য ঢাকায় ছুটে যাচ্ছে।

সরকারি কমিটি প্রতিদিন তাদের হাসপাতালে কতজন রোগী ভর্তি আছে তার তথ্য নিচ্ছে। হাসপাতালে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে করোনা রোগীদের চিকিত্সা দেওয়া হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা হচ্ছে। এত কিছুর পরও করোনা রোগীর চিকিত্সা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

জানতে চাইলে এ সংক্রান্ত সরকারি কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমান ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য রোগীদের চিকিত্সা নিশ্চিত করা। কাউকে হয়রানি করা নয়। আমরা চেষ্টা করেও বেসরকারি হাসপাতালে শত ভাগ করোনা রোগী চিকিত্সা নিশ্চিত করতে পারছি না। তারা আইসিইউতে চিকিত্সক নেই বলে সিট খালি রেখেছে। পার্কভিউ ও ম্যাক্স হাসপাতাল আইসিইউতে রোগী রেখেছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে চিকিত্সা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। সব বেসরকারি হাসপাতালে সব মিলিয়ে ১২১টি আইসিইউ সিটের মধ্যে মাত্র ২৫টিতে রোগী ভর্তি আছে। বাকিগুলো খালি। আমরা চাইলে পুলিশ পাঠিয়ে ধরে এনে বাধ্য করতে পারি।’

বেসরকারি হাসপাতালের পক্ষে নানাভাবে কথা বলছে চট্টগ্রামের স্বাচিপ ও বিএমএর নেতারা। করোনার চিকিত্সা নিয়ে স্বাচিপের গঠিত কমিটির সমন্বয়ক ডা. আনম মিনহাজুর রহমান ইত্তেফাককে বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার দায়িত্ব সরকার নিলেও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিত্সকের দায়িত্ব সরকার নিচ্ছে না। তাই বেসরকারি চিকিত্সকরা সেবা দিতে রাজি হচ্ছে না।’

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি ইত্তেফাককে বলেন, ‘তারা সারা বছর ব্যবসা করছে। এই টাকা তো সরকারকে দেয়নি। জাতির এই জরুরি প্রয়োজনে তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। তাদের সুরক্ষার বিষয়টি সম্পর্কে একটি প্রস্তাব আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠিয়েছি। তারা চিকিত্সক সংকটসহ নানা টালবাহানা করে করোনা রোগীর চিকিত্সার দায় এড়াতে চাচ্ছেন।’