৯ লাখ টাকার বেসিন এক বছরেই ব্যবহার অনুপযোগী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২১

মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) থেকে রক্ষার জন্য বারবার হাত ধোয়ার কথা বলা হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে সেই ব্যবস্থাগুলো প্রায় উঠেই গেছে। গতবছর মহামারির শুরুতে কিছু বেসিন স্থাপন করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা নষ্ট হয়ে গেছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে হাত ধোয়ার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনসমাগম হয়, এমন জায়গাগুলোতে গতবছর ৩০টি বেসিন নির্মাণ করেছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। শিবগঞ্জে ২০টি বেসিন স্থাপন করা হয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে। করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না এলেও এসব বেসিন নষ্ট হওয়ায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি জেলা শহরে নির্মিত বেসিনগুলো সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কোথাও ময়লা জমে আছে, নেই হাত ধোয়ার সাবান। বেসিনে নেই পানি, জমেছে শেওলা। একই অবস্থা রেলস্টেশন ও জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের সামনেও। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে এসব বেসিন ব্যবহার করা হয়নি।

শুধু জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবেশদ্বার ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সামনের বেসিনটি সচল রয়েছে। অপরদিকে করোনার সংক্রমণ রোধে শিবগঞ্জে বসানো হাত ধোয়ার বেসিনগুলো ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। উপজেলা পরিষদ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের বেসিন-পানির ড্রামগুলো অনেক জায়গায় এখন আর দেখা যাচ্ছে না।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বলছে, সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানে বেসিনগুলো স্থাপন করা হয়েছে। সেগুলোতে পানি ও সাবান না থাকার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান দেখভাল করবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিবগঞ্জে প্রথম ধাপে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় উপজেলায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগম পয়েন্টে হাত ধোয়ার বেসিন নির্মাণ করেছিল উপজেলা পরিষদ। কিন্তু কয়েকদিন না যেতেই এসব বেসিনের ব্যবহার কমে গেছে। রাস্তার ধারে যে কয়েকটি বেসিন চোখে পড়ে তাও পরিত্যক্ত। পানি নেই। ময়লা-আবর্জনায় ছেয়ে গেছে। এখন উপজেলা পরিষদ পুনরায় বেসিনগুলো সংস্কারের কথা ভাবছে।

এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের বাস্তবায়নে দুটি বেসিন স্থাপনের মধ্যে একটি অকেজো। এভাবে সরকারি অর্থ অপচয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। শুধু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও উপজেলা পরিষদ নয়, বিভিন্ন এনজিওর পক্ষ থেকেও যেসব বেসিন বসানো হয়েছিল সেগুলোর অবস্থাও একই।

সরেজমিনে কয়েকটি স্পট ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথম ধাপের করোনাকালীন বেশ তড়িঘড়ি করেই বেসিনগুলো বসানো হয়েছিল। কিন্তু মাস না পেরুতেই অনেক বেসিন নষ্ট হয়ে যায়। অনেক জায়গায় পানির ড্রাম নেই। কোথাও সাবান থাকলে পানি নেই, আবার পানি থাকলে সাবান নেই এমন অবস্থা।

স্থানীয়রা জানান, বেসিনগুলো বসানোর কিছুদিন পরই তা অকেজো হয়ে গেছে। এমনকি কয়েকটি বেসিনের ট্যাপ ভেঙে গেছে, পানি ও সাবান থাকা তো দূরের কথা। এরপর কোনো দফতর থেকে কেউ দেখতে বা খোঁজ পর্যন্ত নিতেও আসেনি। পুনরায় বেসিনগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার সরকার বলেন, সাধারণ মানুষের হাত ধোয়ার জন্য জেলার বিভিন্ন স্থানে ৩০টি বেসিন নির্মাণ করা হয়। বেসিনগুলো মাঝে মাঝে পরিষ্কার করা হয় এবং আর সাবানের ব্যবস্থা আমাদের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, যে বেসিনগুলো কিছুটা নষ্ট হয়েছিল সেগুলো সংস্কার করা হয়েছে এবং চালু থাকার পরও সাধারণ মানুষ সেগুলো ব্যবহার করছে না। বর্তমানে যেগুলোতে সাবান নেই সেগুলোতে সাবানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।