বিস্তীর্ণ যশোর জুড়ে আম্পানের দগদগে ক্ষত চিহ্ন বিদ্যুতের মেইন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত, অন্ধকারে অনেক এলাকা News Publisher News Publisher প্রকাশিত: ১২:২৫ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০২০ ধ্বংসাত্মক তাণ্ডব চালিয়ে আম্পান চলে গেলেও বিস্তীর্ণ যশোর জুড়ে আঘাতের দগদগে ক্ষত চিহ্ন ছড়িয়ে রেখে গেছে। মহাঘূর্ণি ঝড়টির ছোবল এখানকার জনজীবন একেবারে জেরবার করে ছেড়েছে। তারপরও জীবন থেমে নেই। দানবীয় ঝড়ের পর মেরামত চলছে ভেঙে ও দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া বাড়িঘর। বাতাসে উড়ে যাওয়া ঘরের চালা ঠিক করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। সেই সাথে ভেঙে পড়া বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ফের সচলের কাজও এগিয়ে চলছে জোর কদমে। এদিকে ভেঙে পড়া গাছ ও ডালাপালা সরিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ফের সচল হয়েছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণও বিতরণ চলছে। বিধ্বস্ত বাড়িঘর মেরামতের জন্য টিন সরবরাহের প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। গত বুধবার ঝড় শুরুর রাতেই প্রবল বাতাসের ধাক্কায় বহু সংখ্যক বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে। উপড়ানো গাছ ও ভাঙা ডালপালায় বিদ্যুত সরবরাহ লাইনের তার ছিঁড়ে যায়। এতে সারা জেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। তবে পরদিন বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ সরবরাহ কিছু মাত্রায় সচল হয়। এদিন যশোর পৌর এলাকায় বেলা বারোটার পর বিদ্যুৎ আসলেও বেশিরভাগ এলাকায় এর আওতার বাইরে ছিল। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ের বেশির ভাগ এলাকাও সেদিন বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় থাকে। জানা যায়, গতকাল শুক্রবারও যশোর শহরের অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল না। সেই সাথে জেলার আট উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন শতকরা ৬০ ভাগ গ্রাহক বিদ্যুতবিহীন ছিলেন। তবে জেলার দুইটি বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি আগামী দুই তিন দিনের মধ্যেই বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে ওঠা সম্ভব হবে। এর মধ্যেই ভেঙে পড়া বিদ্যুত ব্যবস্থা পুরোপুরি সম্ভব হবে। যশোর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) যশোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২’র নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করীম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ পোল ও লাইনের বেশির ভাগই মেরামত শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক হতে হয়তো আর একদিন সময় লাগবে। তিনি দাবি করেন, তাদের মোট সংযোগের শতকরা নিরানব্বই জন গ্রাহকের মধ্যে বিদ্যুত সরবরাহ অটুট রয়েছে। বাদবাকীরা আজ শনিবার থেকে সমস্যামুক্ত হবেন। জানা গেছে, জেলায় ওজোপাডিকোর ৮৬ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এদিকে যশোরের আট উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের প্রচুর পরিমাণ খাম্বা ও লাইনের তার ছিড়ে গেছে। বিশেষ করে মেইন লাইনের তার ছিঁড়ে যাওয়া বহু গ্রাহক বিদ্যুত সেবার বাইরে রয়েছে। যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১’র আট হাজার কিলোমিটার সরররাহ লাইন রয়েছে। জানা গেছে, মূলত মেইন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজার হাজার গ্রাহক অন্ধকারে আছে। আর বিভিন্ন সাবস্টেশন থেকে মেইন লাইনের মাধ্যমে গ্রাহকদের সংযোগে বিদ্যুত সরবরাহ হয়। একটি সাবস্টেশনের আওতায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার গ্রাহকের সংযোগে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। সমিতি-১’র যশোর সদর স্টেশনের এজিএম প্রকৌশলী সাঈদ হোসেন জানান, ঝড়ের তান্ডবে খুঁটি বহু ভেঙে গেছে। অনেক জায়গায় বিদ্যুত সরবরাহ লাইনের তারও ছিড়ে গেছে। বর্তমানে সেগুলো মেরামতে কাজ চলছে। মেরামত শেষ না হওয়ায় মোট গ্রাহকের শতকরা হিসেবে ৬০ ভাগ বিদ্যুৎ সেবা পাচ্ছেন না। তিনি দাবি করেন, লোকবল সংকটের কারণে মেরামতের কাজে একটু দেরি হচ্ছে। তারপরেও আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সব গ্রাহকের সংযোগ ফের সচল হয়ে যাবে। যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানান, ভাঙা গাছ ও ডালপালা সরিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করা হয়েছে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ চলমান রয়েছে। SHARES প্রচ্ছদ বিষয়: