নঁওগার ঐতিহ্যবাহী দুবলাহাটী রাজবাড়ীর গল্পকথা

প্রকাশিত: ৬:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩, ২০২১

লেখা ও ছবি:- আবু সাঈদঃ

দুবলাহাটি রাজবাড়ীটি ইতিহাস আর ঐতিহ্যে মোড়ানো অসাধারন নিদর্শন। ইট, বালুর প্রতিটা কণায় কণায় আছে আভিজাত্যের ছোয়া।

মহলের চারিদিকে ছোট ছোট সুন্দর নকশাখচিত খোপ আছে, কোন এক কালে যেখান প্রদীপ জ্বালানো হতো। আধুনিকতার কিছুটা ছোয়া বাড়িটিতে আছে।

আছে একটি মহলের সাথে অন্য মহলের যোগাযোগ পথ যা আধুনিক যুগেরই নিদর্শন। প্রতিটি ঘরই অনেক অনেক উঁচু উঁচু প্রাচুর্যে ঘেরা। অন্দরমহল থেকে নিচে দেখার ও সুযোগ সেখানে দেখা গিয়েছে। জমিদার বাড়িটিতে প্রায় ৩০০ ঘর আছে। আছে গম্বুজে ঘেরা ঘরও।মহলটির প্রধান ফটকে টেরাকোটার নিদর্শনও ভীষণ ভাবে লক্ষ্যণীয়। প্রাচূর্যে ঘেরা মহলটির প্রতিটি কোনায় কোনায় রয়েছে প্রাচূর্যের অফুরান ছোঁয়া।

অনেক গুলা দিঘী এখানে আছে, যার মধ্যে এখনো তিনটার অস্তিত্ব সরজমিনে পাওয়া যায়। এ থেকে বোঝা যায় মন্দাময় এলাকাটিতে মাছের বিপুল চাষাবাদ হতো।রঘুনাথ বাবু নবাবকে খাজনা হিসেবে কই মাছ দিতেন।
লোকমুখে প্রচলিত রঘুনাথ নামের এক ব্যক্তি এ এলাকায় লবণ ও গুড়ের ব্যবসা করতেন। তিনি দীঘলি বিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খয়রা নদী দিয়ে নৌকা যোগে দুবলহাটিতে ব্যবসার জন্য আসেন (বর্তমানে নদীর অস্তিত্ব আর নেই)।

তিনি প্রায় প্রতিরাতে স্বপ্ন দেখতেন তাঁকে কে যেন বলছে, “তুই যেখানে নৌকা বেঁধেছিস সেখানে জলের নিচে রাজ রাজেশ্বরী দেবীর প্রতিমা আছে। সেখান থেকে তুলে স্থাপন কর।” রঘুনাথ একদিন ভোরবেলা জলে নেমে দেখলেন সত্যিই সেখানে রাজ রাজেশ্বরীর প্রতিমা আছে। তিনি প্রতিমাটি জল থেকে তুলে একটি মাটির বেদী তৈরি করে প্রতিষ্ঠা করলেন। এরপর তার ব্যবসায় ব্যাপক উন্নতি হতে থাকে। এরপর অনেক জমি লিস হিসেবে নিয়ে এবং ক্রয় করে জমিদারী প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী সময়ে জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হলে তারা ভারতে চলে যান।

এইভাবেই কালের অনেক লৌকিক, অলৌকিক এবং কাল্পনিক স্মৃতিপট নিয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে নঁওগার ঐতিহ্যবাহী দুবলাহাটী রাজবাড়ী।