শ্যামনগরে ড.আনছার আলী হাসপাতালটি দখল নিতে নানান ষড়যন্ত্র

প্রকাশিত: ৬:১৮ অপরাহ্ণ, মে ৬, ২০২৩

এম কামরুজ্জামান, শ্যামনগর উপজেলা প্রতিনিধিঃ

সাতক্ষীরা’র শ্যামনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের খানপুরে অবস্থিত ড.আনছার আলী হাসপাতালটি দখল নিতে নানান ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
হাসপাতালটির দখল নিতে ডিড় মালিক আমানুল্লাহ আল মারুফ ও তার স্ত্রী রাবিয়া খাতুন নানান ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে বলে অভিযোগ উঠেছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যাচার সৃষ্টি করে পরিকল্পিত ঘটনা সাজিয়ে ডক্টর আনসার আলী ও তার পরিবারকে নাজেহাল করছে বলে জানিয়েছেন আনছার আলীর স্ত্রী।
তিনি আরো বলেন,মাত্র কুড়ি টাকায় গরীব রোগীরা চিকিৎসা সেবা পাবেন এই স্বপ্ন দেখতেন কানাডা প্রবাসী ব্যাংকার ডক্টর আনসার আলী।কৃষকের ছেলে ডক্টর আনসার আলী প্রবাস জীবনে থাকাকালীন সময়ে বাবা-মায়ের সঠিক চিকিৎসা করাতে পারেননি।তারা আজ বেঁচে নেই তাই বাবা-মায়ের কথা ভেবে তিনি গ্রামে এসে গড়ে তুললেন কুড়ি টাকার হাসপাতাল গরিবের হাসপাতালটি এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।ড.আনসার আলী নামীয় একটি বেসরকারী হাসপাতাল উদ্বোধনের পর থেকে এলাকায় দারুন সাড়া জাগিয়েছে। কানাডা প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যাংকার ডঃ আনসার আলীর প্রতিষ্ঠিত এ বেসরকারী হাসপাতালটিতে সংযুক্ত করা হয়েছে অত্যাধুনিক সব চিকিৎসা ও পরিক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি।
কৃষকের ছেলে ডক্টর আনসার আলী অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার থাকাকালীন ডেপুটেশনে মধ্যপ্রাচ্যের বাহারাইন ও কুয়েতে কয়েক বছর অবস্থান করেছেন।চাকরি ছেড়ে পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে কানাডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। টরেন্টোতে বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের উপর পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে কয়েকটি সংস্থায় লোভনীয় পদে চাকুরিও করেছেন।স্ত্রী, সন্তানেরা কানাডাতে।প্রবাস জীবনে কাড়িকাড়ি টাকা আয় করলেও মনটা পড়ে আছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার খানপুর গ্রামে।
তাই নাড়ির টানে গ্রামে এসে তৈরি করেছেন ফসলের ক্ষেত। নিজের হাতে ধান লাগান এবং কাটেন।বাড়ির আঙিনায় তৈরি করেছেন সুশোভিত ফুলের বাগান, ফলজ-বনজ বৃক্ষরাজির সমাহার।গ্রামের মানুষের চিকিৎসার কথা ভেবে তৈরি করেছেন নিজের নামে গ্রামীণ হাসপাতাল। মাত্র ২০ টাকায় যে কেউ চিকিৎসা নিতে পারবেন এই কনসেপ্ট মাথায় রেখে ১০ শয্যার হাসপাতালটির কার্যক্রম যথারীতি চলছে।
কাজ পাগল মানুষ তিনি। সব সময় কাজ নিয়ে ভাবেন এবং বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেন।সুন্দরবন সংলগ্ন জনপদের গরিব মানুষের কথা ভেবে তিনি নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন কুড়ি টাকার হাসপাতালটি।
হাসপাতালটি পরিচালনা করার জন্য এর ৫০% শেয়ার আমানুল্লাহ আল মারুফকে দেন তিনি। এ ব্যাপারে হাসপাতাল ভবন বরাদ্দের চুক্তিপত্রও সম্পাদন হয়।আমানুল্লাহ আল মারুফের স্ত্রী রাবিয়া খাতুন দ্বিতীয় পক্ষ হিসেবে চুক্তিতে সহি সম্পাদন করেন। চুক্তির পর থেকে হাসপাতালটি গ্রাস করার জন্য শুরু হয় ষড়যন্ত্র। হাসপাতালের ৫০% শেয়ার হোল্ডার ডক্টর আনসার আলীর সঙ্গে কোন রকম পরামর্শ না করে হাসপাতালের অভ্যন্তরে চলতে থাকে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড। চুক্তিপত্র অনুযায়ী ঘর ভাড়ার টাকা পরিশোধ না করে আনসার আলীকে নানান ভাবে হয়রানি শুরু হয়। বিষয়টি স্থানীয় ভুরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ একেএম জাফরুল আলম বাবুকে অবহিত করা হলে তিনি সালিশ বৈঠক ডাকেন। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমানুল্লাহ আল মারুফ ভাড়ার টাকা পরিশোধ করে অন্যত্র চলে যাবেন বলে সময় চান।সে অনুযায়ী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ভবনের মালিক ডক্টর আনছার আলীর কাছে হাসপাতালটি বুঝিয়ে দিয়ে তার অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু হাসপাতাল ছেড়ে না গিয়ে আমানুল্লাহ আল মারুফ সেটি কুক্ষিগত করার জন্য আদালতে মামলা আছে সংক্রান্ত একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকাবাসী অনৈতিক কর্মকান্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে হাসপাতালের গেট বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেয়। প্রবাসী আনসার আলী কানাডাতে অবস্থান করায় মারুফ হাসপাতালটি দখল করতে চেয়েছিল। এলাকাবাসী ও প্রশাসনের তৎপরতায় ষড়যন্ত্রটি সফল হয়নি। তবুও ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই।