দোয়াঃ মুমিন জীবনের অনন্য পাথেয় Ahmed Faiyaz Ahmed Faiyaz প্রকাশিত: ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২২ আমাদের অভিভাবক আল্লাহ তাআলা। বাবা–মা, দাদা–দাদী, নানা–নানী প্রমুখ মুরুব্বীগণ হলেন ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার অস্থায়ী অভিভাবক। তাদের ছায়া আমাদের উপর ততক্ষণই থাকে যতক্ষণ আল্লাহ তাআলা চান। বস্তুত, আমাদের অভিভাবক শুধুই আল্লাহ তাআলা। তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তাঁর কাছেই আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে। সুতরাং দুনিয়ার এই হায়াতটুকুর অভিভাবকও তিনি এবং আখেরাতের অভিভাবকও তিনিই; তিনি চিরস্থায়ী অভিভাবক। জীবনের যত প্রয়োজন তিনিই পূরণ করেন এবং অসহায়ত্বের সময় তিনিই একমাত্র সহায়। ছোট বড় সব কিছু আমরা তাঁর কাছেই চাইব। সাধারণত মানুষ কঠিন জিনিসগুলো আল্লাহর কাছে চায়; সহজগুলো চায় না। অথচ আমাদের প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষা হল, ছোট থেকে ছোট এবং সামান্য থেকে সামান্য বিষয়েও আমাদের আল্লাহর শরণাপন্ন হতে হবে। তাঁর কাছে চাইতে হবে। আমার সুবিধা অসুবিধাগুলো আমি যতটুকু বুঝি আল্লাহ তাআলা তারচে’ বেশি বোঝেন। কারণ, তিনি হলেন আমাদের অভিভাবক। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদীসে এসেছে, আল্লাহ বলেন– يَا عِبَادي، كُلّكُمْ جَائِعٌ إلاَّ مَنْ أطْعَمْتُهُ فَاستَطعِمُوني أُطْعِمْكُمْ. হে আমার বান্দারা! তোমরা সবাই অন্নহীন। তবে যাকে আমি আহার করাই। সুতরাং তোমরা আমার কাছে আহার চাও। আমি তোমাদের আহার দেব। يَا عِبَادي، كُلّكُمْ عَارٍ إلاّ مَنْ كَسَوْتُهُ فاسْتَكْسُونِي أكْسُكُمْ. বান্দারা আমার! তোমরা সবাই বস্ত্রহীন। তবে যাকে আমি বস্ত্র পরিধান করাই। সুতরাং তোমরা আমার কাছে বস্ত্র চাও। আমি তোমাদের বস্ত্র দেব। يَا عِبَادي، إنّكُمْ تُخْطِئُونَ باللّيلِ وَالنّهارِ وَأَنَا أغْفِرُ الذّنُوبَ جَمِيعاً فَاسْتَغْفِرُوني أغْفِرْ لَكُمْ. হে আমার বান্দারা! রাত–দিন তোমরা ভুল কর। আর আমি সকল গোনাহ ক্ষমা করি। সুতরাং তোমরা আমার কাছে ক্ষমা চাও। আমি তোমাদের ক্ষমা করব। এই হাদীসটিতে আরো বর্ণিত হয়েছে– يَا عِبَادي، لَوْ أنّ أوّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَإِنْسَكُمْ وَجنّكُمْ قَامُوا في صَعِيدٍ وَاحِدٍ فَسَألُوني فَأعْطَيتُ كُلّ إنْسَانٍ مَسْألَتَهُ مَا نَقَصَ ذلِكَ مِمَّا عِنْدِي إلاّ كما يَنْقصُ المِخْيَطُ إِذَا أُدْخِلَ البَحْرَ. হে আমার বান্দারা! যদি তোমাদের প্রথম ও শেষ জন, তোমাদের মানুষ ও জিন সকলেই একটি খোলা ময়দানে একত্রিত হয়ে আমার কাছে প্রার্থনা করে, আর আমি তাদের প্রত্যেককে তার প্রার্থিত জিনিস দান করি, তাহলে (এ দান) আমার কাছে যে ভাণ্ডার আছে, তা হতে ততটাই কম করতে পারবে, যতটা সুচ কোনো সমুদ্রে ডোবালে তার পানি কমিয়ে থাকে। –সহীহ মুসলিম, হাদীস ৬৭৩৭ আর এটাও বলা হয়েছে আমাদের বোঝার সুবিধার্থে। নতুবা বাস্তবতা হল, আল্লাহ তাআলার ভাণ্ডার থেকে কিছুই কমে না। অন্য এক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন– لِيَسْأَلْ أَحَدُكُمْ رَبّهُ حَاجَتَهُ كُلّهَا حَتّى يَسْأَلَ شِسْعَ نَعْلِهِ إِذَا انْقَطَعَ. তোমাদের প্রত্যেকেই যেন তার প্রতিটি প্রয়োজন তার রবের নিকটে চায়, এমনকি জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে তাও যেন তাঁর নিকটে চায়। –জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৬০৪/৮ রব মানে হল, যিনি লালন–পালন করেন। সুতরাং আল্লাহ আমাদের রব হওয়ার অর্থ হল, তিনিই আমাদের প্রতিপালন করেন। তো আল্লাহ তাআলাই আমাদের অভিভাবক। আমাদের সবকিছু তাঁর কাছেই চাইব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রয়োজন বা বিষয় এলে সঙ্গে সঙ্গে নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন। তথ্যসূত্রঃ মাসিক আল কাউসার SHARES ধর্ম বিষয়: