আর নয় বাগদা চিংড়ী চাষ এবার হবে ধান

প্রকাশিত: ১০:২৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২৩


এম কামরুজ্জামান, শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

আর নয় বাগদা চিংড়ি চাষ এবার হবে ধান চাষ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে (ধান- চিংড়ি) জোনিং সিস্টেম বাস্তবায়নে সুন্দরবনের কোলঘেষা শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর সিংহরতলী ও চুনকড়ি এলাকার পানি নিষ্কাষন ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে ধান চাষের জন্য চিলের খাল খনন এর শুভ উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা- ৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এস,এম, জগলুল হায়দার। ৭ জানুয়ারি (শনিবার) বিকাল ৪ টায় প্রধান অতিথি মাটি কেটে ও ফিতা কাটার মাধ্যমে খাল খননের শুভ উদ্বোধন করেন।
মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধার সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শ্যামনগর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও শ্যামনগর সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব জি,এম, আকবর কবীর, ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল গাজী,জিয়াউর রহমান, উৎপল কুমার জোয়ারদার। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য আনারুল ইসলাম, হরিদাস হালদার, রেহানা বেগম, পলাশী রানী, নিপা রানী, কাজল কান্তি, দেবাশিষ গায়েন, জাহাঙ্গীর সরদার সহ তিন শতাধিক কৃষক কৃষাণী। মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান অসীম মৃধা তার বক্তব্য বলেন,”এই এলাকায় খাল খনন করা হলে বর্ষা মৌসুমে মিষ্টি পানি সংরক্ষন করে কৃষকরা শত শত একর জমিতে আমন ও বোরো ধান উৎপাদন করতে পারবে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আরো বলেন, এই এলাকায় বাগদা চিংড়ি চাষ ভালো হচ্ছেনা,ঘের মালিকরা কৃষকদের হারির টাকা ঠিকমত দেয়না।মহাজন ঘের মালিকদের খামখেয়ালীপনায় তারা দিনের পর দিন নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এজন্য ধান চাষ এই এলাকায় মানুষের প্রাণের চাহিদা হয়েছে।
কৃষক আবির শেখ জানান, এই এলাকায় গভীর নলকূপে ভালো মিষ্টি পানি পাওয়া যায়, যার ফলে চিংড়ি চাষের পরিবর্তে ধান চাষ, সবজি চাষ ও সাদা মাছ চাষের মাধ্যমে কৃষকরা অধিক লাহবান হবে।
কৃষক বিমল মন্ডল বলেন, লবনাক্ততার কারনে কোন ফসল ভালো হচ্ছেনা ফলে কৃষকরা দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত ও অভাবগ্রস্ত হচ্ছে, তিনি আরোও বলেন, এই এলাকায় লবন পানি বন্ধ করে চিলের খালে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা হলে কৃষকরা আবার গোলা ভরা ধান পাবে গোয়াল ভরা গরু পাবে এবং পুকুর ভরা মাছ পাবে।”
কৃষক সুরত গাজী বলেন, এলাকার খাল ইজারা নিয়ে একশ্রেনীর স্বার্থান্বেষী মহল লবন পানি উঠিয়ে সকল মিষ্টি পানির আধার নষ্ট করে দিচ্ছে যার ফলে এই এলাকায় কোন ফসল ভালো হচ্ছেনা এবং মিষ্টি পানির মাছ হারিয়ে গেছে।” কৃষক আকবর আলী বলেন, এই খাল ইজারা মুক্ত করে খনন করে মিষ্টি পানির আধার করা হলে সহস্রাধিক কৃষক সোনার ফসল ফলিয়ে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারবে।
প্রেসক্লাব সভাপতি আকবর কবীর বলেন, ৮০ দশক থেকে শুরু হওয়া বাগদা চিংড়ি চাষ সামগ্রিকভাবে সাধারণ মানুষের জীবনে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। ঘের মালিক মহাজনরা ক্ষুদ্র জমির মালিকদের ঠিকমতো জমির লীজের টাকা দেয় না। আবার ভাইরাসের কারণে ঘের মালিকরাও দারুন ভাবে বিপর্যস্ত। সবমিলিয়ে সাধারণ মানুষ এখন চিংড়ি চাষের বিপক্ষে কথা বলছে। মানুষ আবার ধান চাষে ফিরতে চায়।
প্রধান অতিথি এস, এম, জগলুল হায়দার এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য কৃষিতে বর্তমান সরকার বিপ্লব ঘটিয়েছে। শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ এলাকার এই অঞ্চলটিতে সবুজ বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। খালটি খনন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।