যশোরে স্বর্ণ বহণকারিকে অপহরণকারি দলের ০২ জন আটক

প্রকাশিত: ৭:৫৬ অপরাহ্ণ, জুন ৯, ২০২২

মোঃ সাহিদুল ইসলাম শাহীন,বিশেষ প্রতিনিধিঃ

রতে পাচারের সময় ০৩ কেজি স্বর্ণ খোয়া যাওয়ায় দুই স্বর্ণ বহণকারীকে অপহরণ করে চোরাকারবারির গডফাদাররা। অপহরণদ্বয়ের পরিবার পুলিশের দ্বারস্থ হলে যশোর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা পাঁচ দিন পর দুই অপহরণ ভিকটিমকে বেনাপোল পোর্ট থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। বুধবার বিকালে যশোর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

গ্রেফতার হওয়া অপহরণকারী ব্যাক্তিরা হলো, যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার ছোট কাবিল পুর গ্রামের মহাসিন আলী মাস্টারের ছেলে আ,স,ম মোজাফ্ফর হাসান ওরফে আবু সাঈদ (৪৯) ও যশোর শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে রবিউল হোসেন ওরফে লিটন (৪৩)। এসময়ে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা অপহরণকারীদের কাছ থেকে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও ৪টি মোবাইলফোন জব্দ করা হয়।

ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ২ জুন ২০২২ ইং তারিখ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চৌগাছা কাবিলপুর বাজারের আবু সাঈদের কীটনাশকের দোকানের সামনে থেকে আবু সাঈদ দুটি কীটনাশকের প্যাকেটে করে তিন কেজি সোনা ভারতে পাচারের জন্য দেয় চৌগাছা শাহজাদপুর গ্রামের আলমের ছেলে শাহিনের নিকট। এই সোনা নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দিলে তারা পাবেন ১ হাজার টাকা। একপর্যায়ে শাহিন তিন কেজি সোনা গ্রহণ করার পর যশোর বাঘারপাড়ার বেতালপাড়া এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলে (নিজের শ্যালক) ইয়ামিন (১৯)কে ও তার ভাই হুরায়রা (১৪) মাধ্যমে প্যাকেট ২টি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠানোর জন্য শাহাজাদপুর মাঠে পাঠায়। সেখানে এপাচি লাল রংয়ের একটি মটরসাইকেলযোগে দুই জন অজ্ঞাত লোক ইয়ামিনকে ভারতের অমল-রাজুর লোক পরিচয় দিয়ে কৌশলে দেড় কেজি সোনার ১টি প্যাকেট নিয়ে চলে যায়। আরেকটি প্যাকেট হুরায়রা ভয়ে মাঠে ফেলে দেয়। এর পর সোনা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি সোনার প্রধান চোরাকারবারী বা মালিক শার্শা উপজেলার মন্টু ও লিটনকে জানালে তারা শাহীন ও ইয়ামিন কে অপহরণের কৌশল তৈরি করে।

পরের দিন ৩ জুন ২০২২ ইং তারিখ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চৌগাছা কাবিলপুর বাজারে আবু সাঈদের কীটনাশকের দোকানের সামনে আবু সাঈদ নিজে মন্টু ও লিটনকে নিয়ে শাহীন ও ইয়ামিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসে। মন্টু লিটন গং ফোন দিয়ে আরো ৪/৫ জনকে ডেকে নিয়ে শাহীন ও ইয়ামিনকে অপহরণ করে নিয়ে বেনাপোলে একটি অজ্ঞাত বাড়ীতে আটকে রেখে টর্চার করতে থাকে। পরের দিন অর্থাৎ ৪ জুন ইয়ামিন কৌশলে পালিয়ে আসলেও শাহীনকে তারা ৫ দিন যাবৎ আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালাতে থাকে।

একপর্যায়ে ভুক্তভোগী শাহিনের পিতা ৭ জুন চৌগাছা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে। মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার মামলাটির তদন্তভার দেন যশোর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপর। একপর্যায়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রুপণ কুমার সরকার মামলাটির তদন্তভার দেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের চৌকস অফিসার এসআই মফিজুল ইসলামের নিকটে। তদন্ত কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারী ও ভিকটিমের অবস্থা শনাক্ত করেন।

একপর্যায় বুধবার দিনব্যাপি গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা যশোর চৌগাছার কাবিলপুর ও ঝিকরগাছা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই অপহরণকারী কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। অপহরণকারীদ্বয়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে বেনাপোল পৌর গেট সংলগ্ন হক ফিলিং স্টেশনের পাশের একটি ঘর থেকে অপহরণ হওয়া শাহীনকে উদ্ধার করে।

গ্রেফতার হওয়া অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে যশোর বিজ্ঞ আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে যশোর জেলা ডিবি পুলিশ অফিস ইনচার্জ রুপণ কুমার জানান।