খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায় বিএনপির : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৩৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায় বিএনপি ও তার চিকিৎসায় নিয়োজিতদের বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

(৩১ ডিসেম্বর) শুক্রবার সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধকালীন পাক-হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুল হকের বীরত্বগাঁথা অবলম্বনে নির্মিতব্য পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘দামপাড়া’ এর মহরত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতা দেখিয়ে তার দণ্ড স্থগিত রেখে মুক্ত রেখেছেন। এতে তিনি তার মতো করে পরিবার ও দলের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সরকারের অধীনে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন না। সুতরাং বেগম জিয়ার যদি এখন স্বাস্থ্যের কোনো হানি হয়, এর জন্য দায়ী হবে বিএনপি, তার পরিবার ও চিকিৎসকসহ যারা তার স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন তারা।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যদি রাজপথে বেগম জিয়ার মুক্তি চান, তাহলে সরকারের কাছে কেন তারা বিদেশ পাঠানোর আবেদন জানান। এই দ্বিচারিতা তো পরিহার করা উচিত তাদের।

গাড়ি পোড়ানো ও মানুষকে জিম্মি করে বোমা নিক্ষেপের মামলায় হুকুমের আসামি হওয়া সত্ত্বেও যে ধরনের রাজনৈতিক স্বাধীনতা তারা ভোগ করছেন এবং সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিষোদগার করছেন, অন্য কোনো দেশে এতটুকু করতে পারতেন কি না সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সকালে একবার সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন, বিকেলে একবার করেন, আবার মাঝে মধ্যে সন্ধ্যাবেলায়ও করেন। তাদের নেতারা সারাদেশে ঘুরে ঘুরে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে।

রাজনৈতিক স্বাধীনতায় তারা এর চেয়ে বেশি কী চান ? তারা কী অবাধে গাড়িঘোড়া ও মানুষের সম্পত্তি পোড়ানোর অধিকার চান? ওনারা কী দিনের পর দিন হরতাল ডেকে মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখতে চান, যেটি ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে করেছেন।’

এর আগে সিএমপি পুলিশ লাইনসের মাল্টিপারপাস হলে দামপাড়া চলচ্চিত্রের মহরত অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দামপাড়া জায়গাটি একটি ঐতিহাসিক জায়গা। ১৯৩০ সালে এখানেই ছিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার। মাস্টারদা সূর্যসেন তার বিপ্লবী বাহিনীকে নিয়ে এই চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে চট্টগ্রাম অঞ্চলকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে ১১ দিন স্বাধীন রেখেছিলেন। সেই ইতিহাস কিন্তু সবাই জানে না।’

তিনি বলেন, ‘দামপাড়ায় ১৯৩০ সালের ঘটনা আর ১৯৭১ সালের ঘটনার মধ্যে একটি বৈপরীত্য আছে। ১৯৩০ সালে এখান থেকে অস্ত্র লুণ্ঠন করতে হয়েছিল। যা দিয়ে বিপ্লবীরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলকে তারা ১১ দিন স্বাধীন রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। আর ১৯৭১ সালে লুণ্ঠন করতে হয়নি। তখন অস্ত্রাগারের রক্ষক ছিলেন পুলিশ সুপার শামসুল হক। তিনিই অস্ত্রগুলো বিতরণ করে দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে। সুতরাং দুই ঘটনার মধ্যে একটা বৈপরীত্য আছে।’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভির সভাপতিত্বে ও উপ-পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, সাবেক এসপি শামসুল হকের স্ত্রী মাহমুদা হক চৌধুরী, দামপাড়া ছবির পরিচালক শুদ্ধমান চৈতন, নায়ক ফেরদৌস, নায়িকা আশনা হাবীব ভাবনা ও চলচ্চিত্রটির রচয়িতা আনন জামান প্রমুখ।